ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আলোচিত খুলনা

খুলনা ব্যুরো
🕐 ৯:২৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৮

বিদায় নিল ২০১৮। একটি ইংরেজি বর্ষপঞ্জী। এবছর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের মতো খুলনা বিভাগেও কিছু ঘটনা আলোড়ন তুলেছে। তাতে যেমন আছে সুখানুভূতি, তেমনি আছে কষ্ট।

গায়েবি মামলার ফাঁদে বিএনপি : খুলনায় গায়েবি মামলার ফাঁদে পড়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সাড়ে তিন হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা দায়ের করা হয়। এতে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করে। খুলনার বিএনপির সিনিয়র নেতারা এসব মামলাকে ‘গায়েবি’ মামলা আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, খুলনা জেলা ও মহানগরে ২৫টি গায়েবি মামলা করে সাড়ে তিন হাজারের মতো নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। সরকার বিএনপিকে দমন করতে হাতিয়ার হিসেবে মিথ্যা মামলাকে বেছে নিয়েছে। এসব মামলার উদ্দেশ্য এখন স্পষ্ট। বিএনপি যেন নির্বাচনে অংশ না নেয় তাই ছিল লক্ষ।
বিপরীতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনর সোনালী সেন বলেন, এ কথা ঠিক নয়। ঘটনা ঘটছে বলেই তো মামলা হয়েছে।
খুলনা জেলা বিএনপির সভাপতি এসএম শফিকুল আলম মনা বলেন, এক মাস ধরে প্রতিদিনই খুলনার ৯ থানায় গায়েবি মামলা হচ্ছে। এর মধ্যে কয়রায় ৩টি, দাকোপে ২টা, বটিয়াঘাটায় ৩টি, ডুমুরিয়ায় ৪টি, দিঘলিয়ায় ২টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় হাজার আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আছে আরও ২ হাজার। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন ও আন্দোলনকে সামনে রেখেই এসব গায়েবি মামলা করছে পুলিশ। এর সঙ্গে বিএনপির কোনো নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততা নেই। কেবল নেতাকর্মীদের হয়রানি করার লক্ষ্যে এসব মামলা করা হচ্ছে।
মহানগর বিএনপির প্রথম যুগ্ম-সম্পাদক তারিকুল ইসলাম বলেন, কেবলমাত্র ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ অক্টোবর খুলনা মহানগরীতে ১১টি মামলা হয়েছে।
খুসিক নির্বাচন : খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে (ধানের শীষ) বিপুল ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী (নৌকা) তালুকদার আবদুল খালেক। যদিও বিএনপির দাবি নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু হয়নি।
এ নির্বাচনের মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ২৮৯টি। ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ২৮৯টি। এর মধ্যে তিনটি কেন্দ্র স্থগিত করা হয়।
এদিকে, কয়েকটি কেন্দ্রে অনিয়ম, অভিযোগ, ব্যালট পেপারে জোরপূর্বক সিল মারার ঘটনা ঘটেছে। আবার ভালো ভোটও হয়েছে অনেক কেন্দ্রে। খুলনার ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী বলেছেন, ভোট ভালো হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী বলেছেন, অন্তত ৪০টি কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউনুচ আলী বলেন, দুই একটি ঘটনা ছাড়া ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বিএনপির অভিযোগ সুস্পষ্ট নয় বলে উল্লেখ করেছেন।
যদিও অনিয়ম ও জাল ভোটের অভিযোগে একটি কেন্দ্রে ভোট বাতিল, দুটি কেন্দ্র এবং একটি বুথে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। এর বাইরে একটি কেন্দ্রের অদূরে বিএনপির নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করা হয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬ আসনেই নৌকা জয়ী : ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনার ৬টি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। খুলনা-১ আসনে আওয়ামী লীগের পঞ্চানন বিশ্বাস পেয়েছেন ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আমীর এজাজ খান পেয়েছেন ২৮ হাজার ৪৩৭ ভোট।
খুলনা-২ আসনে (ইভিএম) আওয়ামী লীগের শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল পেয়েছেন ১ লাখ ১২ হাজার ১শ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু ২৭ হাজার ৩৭৯ ভোট পেয়েছেন।
খুলনা-৩ আসনের ১১৭ কেন্দ্রের ফলাফলে আওয়ামী লীগের বেগম মন্নুজান সুফিয়ান পেয়েছেন ১ লাখ ৩৪ হাজার ৮০৬ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির রকিবুল ইসলাম বকুল ২৩ হাজার ৬০৬ ভোট পেয়েছেন।
খুলনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের আবদুস সালাম মুর্শেদী পেয়েছেন ২ লাখ ২৩ হাজার ২১৪ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আজিজুল বারী হেলাল ১৪ হাজার ১৮৭ ভোট পেয়েছেন।
খুলনা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের নারায়ন চন্দ্র চন্দ পেয়েছেন ২ লাখ ৩১ হাজার ৭২৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের (জামায়াত) মিয়া গোলাম পরওয়ার ৩২ হাজার ৯৫৯ ভোট পেয়েছেন।
খুলনা-৬ আসনে ১৪১ কেন্দ্রের ফলাফলে আওয়ামী লীগের শেখ মো. আকতারুজ্জামান বাবু পেয়েছেন ২ লাখ ৮৪ হাজার ৩৪৯ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের (জামায়াত) আবুল কালাম আজাদ ১৯ হাজার ২৫৭ ভোট পেয়েছেন।
খুলনার ৬টি সংসদীয় আসনে ১০টি রাজনৈতিক দলের মোট ৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ভোটগ্রহণ শুরুর পর থেকে দুপুর পর্যন্ত কেন্দ্র দখল, জাল ভোট, ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দেওয়া এবং পুলিশের বিরুদ্ধের ভোট জালিয়াতির অভিযোগ এনে ৬ প্রার্থী ভোট বর্জন করেন।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper