উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের মর্যাদা
ঘুরে দাঁড়ানোর বিস্ময়
তুষার রায়
🕐 ১১:১২ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৮
লাল সবুজের পতাকা বুকে জড়িয়ে বিজয়ের ৪৮ বছরে পা রাখল বাংলাদেশ। হাঁটি হাঁটি পা পা করে বাংলাদেশ এগিয়েছে সমৃদ্ধির পথে। স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন হয়েছে। বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশের পথে, তবে আরও বহু দূর পাড়ি দিতে হবে। সম্প্রতি বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের মর্যাদা অর্জনের স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ।
চলতি বছর মহান স্বাধীনতার মাসে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে (১৭ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের হাতে এ উত্তোরণের চিঠি তুলে দেয় জাতিসংঘ। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালে উন্নয়নশীল দেশ হবে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী, মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা এ তিনটি সূচকের দুটিতে উত্তীর্ণ হলে কোনো দেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্য বলে বিবেচিত হয়।
এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্যতা হিসেবে মাথাপিছু আয়ের মানদ- ১২৩০ ডলার বা তার বেশি। বাংলাদেশের গড় মাথাপিছু আয় বর্তমানে ১ হাজার ৭৫১ ডলার।
মানবসম্পদ সূচকে যোগ্যতা নিরূপণের জন্য স্কোর ধরা হয় ৬৬ বা তার বেশি। বাংলাদেশের স্কোর সেখানে ৭২ দশমিক ৮। আর অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকের স্কোর ছিল ৩২ বা তার কম। বাংলাদেশের স্কোর ২৫। কয়েক বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। রিজার্ভ ইতোমধ্যে ৩৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু হচ্ছে। আজ বিদ্যুতে আলোকিত সমগ্র বাংলাদেশ। এখন লাখ লাখ বস্ত্র কন্যা সারি বেঁধে কাজে যায়। নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কর্মসূচিসহ শিশু মৃত্যু হার রোধেও সাফল্য প্রশংসনীয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) ইতোমধ্যে ৭.৮৬ শতাংশ অর্জিত হয়েছে।
চার দশক আগেও সাধারণ চিত্র ছিল এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসন, পর্যুদস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা, শূন্য খাদ্য ভাণ্ডার, ভেঙে পড়া প্রশাসন, হাজার হাজার যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং তিন লাখ বীরাঙ্গনার পুনর্বাসন, বৈরী আন্তর্জাতিক পরিবেশ, বিধ্বস্ত শিল্প, বুভুক্ষ ৭০ শতাংশ জনগণ। নানা বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এর মূলে রয়েছে এ দেশের লড়াকু মানুষ।
১৯৭১ সালে হার না মানা মানুষের অপরাজেয় বিকাশের ফসল এই আর্থিক সাফল্য। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মতে, ‘সামাজিক-অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে এগিয়ে। এমনকি সামাজিক কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভারত থেকেও এগিয়ে।’ উন্নয়নযাত্রায় বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ানোর এক রূপকথা।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228