সামাজিক মাধ্যমে যথেচ্ছ ট্রল, ব্যক্তি স্বাধীনতা লঙ্ঘন হচ্ছে
খোলা কাগজ ডেস্ক
🕐 ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ০২, ২০২০
সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রলের শিকার হচ্ছেন সেলিব্রেটি থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। এতে চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে ব্যক্তি স্বাধীনতা। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, পরিবার থেকেই অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার শিক্ষা জরুরি। আর প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে ভুক্তভোগীরা পেতে পারেন প্রতিকার।
ডিজিটাল দুনিয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বাইরে খুব কম মানুষই। জন্মদিনের শুভেচ্ছা থেকে শুরু করে জীবন বাঁচাতে রক্তের সন্ধানেও যেমন লাগে এই মাধ্যম, তেমনি মাঝে মাঝে তা হয়ে ওঠে ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের ভয়ংকর হাতিয়ার।
সাম্প্রতিক সময়ের কয়েকটি ঘটনা চোখে আঙ্গুল দিয়ে আবারও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে আমাদের। ভাবতে হচ্ছে, একটি মানুষের অন্দরমহলে কতটুকু উঁকি দেয়া যাবে। কলকাতার জনপ্রিয় ও মেধাবী অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য। বিয়ে করেছেন তার দীর্ঘদিনের বন্ধু মধুরিমা গোস্বামীকে। অথচ তাদের বিয়ের ছবি দেখে মধুরিমার দৈহিক গঠন, গায়ের রঙ নিয়ে শুরু হয় ট্রলের বন্যা।
একই রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন, বাংলাদেশের অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নিজের ফেসবুক স্ট্যাস্টাসে জানিয়ে ছিলেন ডিভোর্সের কথা। ব্যাখা করেছেন তিনি কেন ডিভোর্স দিয়েছেন অপুকে। তবুও নিস্তার মেলেনি ট্রল থেকে। কেবল মিডিয়ার মানুষ নন, সাধারণ মানুষও এই ট্রলের শিকার হচ্ছেন।
মত প্রকাশ করার এখন অবারিত সুযোগ। যে কেউ ইচ্ছা করলেই ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক যেকোন সমালোচনাই করতে পারেন। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে পরিণত করেছেন ট্রলের উর্বর ভূমিতে।
কেন এই বিকৃতি। যেকোনভাবে একটি মন্তব্য করতে পারাতেই যেন সুখ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশন অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের প্রভাষক নাফিজা ফেরদৌসী বলেন, আমাদের ফ্যামেলির ব্যাকগ্রাউন্ড কেমন, আমরা কোন পরিবার থেকে উঠে এসেছি- এটাও কিন্তু একটা বড় ভুমিকা পালন করে।
প্রশ্ন হলো এই অসংগতি কিংবা সংকটের পিছনে গণমাধ্যম কি দায় এড়াতে পারে? এ বিষয়ে মতামত জানালেন এই গণমাধ্যমকর্মী।
গণমাধ্যমকর্মী খান মুহাম্মদ রুমেল বলেন, বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অনেক বিস্তার ঘটেছে। আমরা মনে হয়, আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে মতো সুষ্ঠু শিক্ষিত হয়ে উঠতে পারিনি।
সামাজিক এই সংকট থেকে বের হতে প্রযুক্তিগত কোন সমাধান আছে কি?
প্রযুক্তিবিদ সালাউদ্দিন সেলিম বলেন, এজন্য একটা কমিউনিটি তৈরি করা দরকার। তাদের কাজ হবে সামাজিকমাধ্যমে যারা উক্ত্যক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করা।
আইন কিংবা বিধি নিষেধ দিয়ে নয়, সাধারণ মানুষকে ভালো মন্দের ব্যাপারে সচেতন করতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোক সকলের ভালোবাসা আর সৌহার্দ্যের উর্বর ভূমি- এমনটাই সবার প্রত্যাশা।