ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পরিবেশ সংগ্রামী কিঙ্করী দেবী

রোকেয়া ডেস্ক
🕐 ৫:৪৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৮

১৯২৫ সালে ভারতের হিমাচল প্রদেশের ঘাতন গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে কিঙ্করী দেবীর জন্ম। শিক্ষার আলোও কখনো পাননি। একসময় কোনো মতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর একটি কাজ জোগাড় করলেন, তারপর থেকে এলাকার রাস্তাঘাট পরিষ্কার করতেন।

তবে প্রকৃতির প্রতি তার ছিল প্রবল ভালোবাসা। অশিক্ষিত হয়েও তিনি তার আশপাশের মানুষদের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করতেন। পরিবেশের ক্ষতি যাতে না হয়, সে সম্পর্কে সবাইকে সজাগ থাকতে বলতেন।
হিমাচলের দুন উপত্যকাটি চুনাপাথরে একসময় বেশ সমৃদ্ধ। ১৯৮৫ সালে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে এসব চুনাপাথর উত্তোলনের জন্য খনির মধ্যে খননকার্য শুরু হয়। আর এর ফলে এই অঞ্চলে পানির সম্ভার কমে যেতে থাকে। জঙ্গল আস্তে আস্তে ফিকে হতে থাকে। পানির সম্ভার কমে যাওয়ায় চাষাবাদেরও ব্যাপক ক্ষতি হতে লাগলো।
তিনি এ বিষয়ে স্থানীয়দের নিয়ে শুরু করলেন আন্দোলন। এক পর্যায়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তায় কিঙ্করী দেবী ও গ্রামবাসী মিলিতভাবে ১৯৮৭ সালে অবৈজ্ঞানিক ও অনিয়ন্ত্রিত খনন কার্য বন্ধের দাবিতে ৪৮ জন খনি মালিকের বিরুদ্ধে শিমলা হাইকোর্টে মামলা করেন। সেই মামলা আদালতে টিকল না। আদালত থেকে কোনো রকম সুফল না পাওয়ায় কিঙ্করী দেবী শিমলা হাইকোর্টের সামনে অনশন শুরু করলেন। একটানা ১৯ দিন চলল তার সেই অনশন। ফলস্বরূপ, শিমলা হাইকোর্টে আবার মামলাটি ওঠে। এবার আদালত এই খনন কার্যে স্থগিতাদেশ জারি করেন। পরে সুপ্রিম কোর্টও কিঙ্করী দেবীর পক্ষেই রায় দেন। আর এই মহীয়সী নারীকে সম্মান জানানোর জন্য ১৯৯৫ সালে আন্তর্জাতিক মহিলা সম্মেলনে তাকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ১৯৯৯ সালে ‘ঝাঁসী কি রানী লক্ষ্মীবাঈ স্ত্রী শক্তি’ পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। ২০০৭ সালে ৮২ বছর বয়সে এই পরিবেশ সংগ্রামী নারীর প্রয়াণ ঘটে।

 
Electronic Paper