ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ক থা মা লা

রোকেয়া ডেস্ক
🕐 ১২:৪০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৮

মুক্তিযুদ্ধ আমার কাঁধে ঝোলা দিয়েছে। আমার খালি পা, দুঃসহ একাকিত্ব মুক্তিযুদ্ধেরই অবদান। আমার ভেতর অনেক জ্বালা, অনেক দুঃখ। আমি মুখে বলতে না পারি, কালি দিয়ে লিখে যাব। আমি নিজেই একাত্তরের জননী।

 

 

মুক্তিযুদ্ধ করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। এ দেশটাকে আমাদেরই গড়তে হবে। দেশের মানুষকে আমি সে কথাটিই বলতে চাই। চলুন, বিলাসিতা-উপভোগ এসব বাদ দিয়ে সবাই মিলে আমরা এই দেশ গড়ি।


অন্ধ সমাজ ব্যবস্থা আর অমানবিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সমাজ সচেতনতামূলক বাস্তবধর্মী লেখাই মূলত আমি লিখে থাকি। এর মাধ্যমে সমাজের কুসংস্কার, ভ্রান্ত ধারণা, সাম্প্রদায়িকতা, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ অর্থাৎ শ্রেণিবৈষম্য দূর করাই আমার লেখার উদ্দেশ্য।


আমার একটি স্বপ্ন আছে। আর সেটি হচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে অনাথ আশ্রম গড়ে তোলা। এ জন্য ৪০ শতক করে জায়গা কিনব। যদি না পারি প্রয়োজনে দুই শতক জায়গা কিনব। সেখানেই অনাথ আশ্রম গড়ে তুলব।


মুক্তিযুদ্ধে দেশের মাটির মুক্তি হয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষের মুক্তি এখনো অর্জিত হয়নি। মানুষের মুক্তি না হলে স্বাধীনতার মূল্য নেই।


বন্ধ্যা নারী যেমন আছে, বন্ধ্যা পুরুষও তেমন আছে। বন্ধ্যা নারীর স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে সন্তানের বাবা হতে পারছে। কিন্তু বন্ধ্যা স্বামীর স্ত্রীর জন্য সেই স্বাধীনতা কেন থাকবে না?


কারও কাছে জীবনে হাত পাতিনি। আমি নিজের লেখা বই বিক্রি করি। যেদিন বিক্রি করতে পারি সেদিন খাই, যেদিন পারি না সেদিন উপোস থাকি।


আমার সন্তানরা শহীদের মর্যাদা পায়নি। কিন্তু তারা আমার কাছে শহীদ। কারণ, একাত্তর আমাকে দিয়েছে ‘পোড়া ভিটে, কাঁধের ঝোলা, ছেলের শোক আর খালি পা।


আমার ছেলেদের আমি পোড়াতে দিইনি। এই মাটিতে তারা শুয়ে আছে। আমি কীভাবে জুতা পায়ে হাঁটি। পারলে তো বুক দিয়ে চলতাম-ফিরতাম। তারা কষ্ট পাবে।

 
Electronic Paper