সংগীতের ঝংকারে নারীশক্তি
প্রথম নারী ড্রামার
রোকেয়া ডেস্ক
🕐 ২:২৯ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০১৯
জর্জিনা হক। বয়স তখন ১৩ কি ১৪। বড় ভাইরা ব্যান্ডের দলবেঁধে গান গাওয়া শুরু করেছে। তাদের ব্যান্ডের নাম আইওলাইটস। সাব্বির কাদির সেই ব্যান্ডের ড্রামার। তাকে দেখেই শখ হলো ড্রাম বাজাবেন। কিন্তু পাবেন কোথায়? সেই ১৯৬৮ সালে কি আর আজকের দিনের মতোন চাইলেই অনলাইনে অর্ডার দিলে ড্রাম চলে আসত নাকি?
কিন্তু জর্জিনাকে কে দমায়? বাড়িতে বসে হাঁড়ি, কুড়ি দিয়ে তৈরি করে নিলেন ড্রাম। হাতে তুলে নিলেন স্টিক। শুরু করলেন ড্রাম বাজানোর মকশো। মাঝে মাঝে বড় ভাইয়ারা প্র্যাকটিসের ফাঁকে চা খাওয়ার ব্রেক নিলে তিনি বসে যেতেন ড্রাম সেটটার সামনে। তবে সেটাও করতে হতো লুকিয়ে লুকিয়ে। আস্তে আস্তে রপ্ত হয়ে গেল ড্রামের বাজনা। তখন আর তাকে ঠেকিয়ে রাখা যায়নি। রীতিমতো ড্রামার হিসেবে নাম ছড়িয়ে পড়ল জর্জিনা হকের। এরই মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ হলো, দেশ স্বাধীন হলো। ১৯৭২ সালে বাংলা গানের ব্যান্ড হিসেবে সূচনা হয় ‘স্পন্দন’-এর। বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামালের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় শুরু হয় এই ব্যান্ডের পথচলা।
জর্জিনা হকের বাবা তখনকার দিনের জ্যেষ্ঠমন্ত্রী। তিনি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহযোগী ছিলেন, ঘনিষ্ঠ বন্ধুও ছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাকে খুবই পছন্দ করতেন। হক পরিবারের ছেলে মেয়েরা শেখ পরিবারের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে এক স্কুলে লেখাপড়া করত।
সেই হিসেবে এ বাড়ির লোকজনকে খুব ভালো করেই চিনত ও বাড়ির লোকজন। সেই চেনাজানা থেকেই শেখ কামাল জানতেন জর্জিনা ভালো ড্রাম বাজান। জোর করে তিনিই জর্জিনাকে স্পন্দনের ড্রামার হিসেবে বাজাতে বললেন। তখন জর্জিনার বয়স কত হবে? ১৬ কি ১৭ বছর? সেই বয়সেই বাংলাদেশের প্রথম নারী ড্রামার হিসেবে মঞ্চে আত্মপ্রকাশ করলেন জর্জিনা।