অদম্য নুসরাত
রোকেয়া ডেস্ক
🕐 ২:৪৪ অপরাহ্ণ, মে ১৫, ২০১৯
২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর। টাঙ্গাইলের সখীপুরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে (সিজার অপারেশন) মা হয়ে ২৩ ঘণ্টা পর স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেন নুসরাত জাহান। পরীক্ষা শেষে তিনি আবার হাসপাতালে ফিরে যান। দুপুর ১টায় সরকারি মুজিব কলেজের ওই শিক্ষার্থী সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ কেন্দ্রে অর্থনীতি তৃতীয়পত্র পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ঘটনায় তখন গোটা দেশ বিস্মিত হয়।
দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টার পরীক্ষায় নুসরাত জাহান অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে বেঞ্চে বসে টানা সোয়া তিন ঘণ্টা পরীক্ষার হলে বসে উত্তরপত্রে লিখেছেন বলে জানান ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক শরীফুল ইসলাম হান্নান। নুসরাত জাহান সোয়া ৪টায় পরীক্ষার হল ত্যাগ করে ব্যাটারিচালিত অটো ভ্যানে আবার হাসপাতালের বিছানায় চলে যান। এ বিষয়ে অদম্য নুসরাত জাহানের স্বামী সাইফুল ইসলাম সানি বলেন, আল্ট্রাসনোগ্রামের প্রতিবেদন অনুযায়ী আরও এক সপ্তাহ পরে প্রসব হওয়ায় কথা ছিল।
কিন্তু গত রোববার বেলা ১১টার দিকে ব্যথা শুরু হলে সঙ্গে সঙ্গেই সখীপুরের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করি। বেলা ২টার দিকে নুসরাত কন্যাসন্তানের মা হন। এর আগে বাংলা, সমাজকর্ম ও ইসলাম শিক্ষা পরীক্ষায় অংশ নেয়। সোমবারের পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ার অনুরোধ করলেও তা মানেনি সে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নুসরাত বলেন, কষ্ট হয়েছে, তারপরও পরীক্ষা দিয়েছি। প্রশ্ন কমন ছিল, ৯০ ভাগই উত্তর করেছি।
পরীক্ষা ভালো হয়েছে। তার অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক আবদুস সাত্তার বলেন, মেয়েটি সাহসী। আর আমাদের দেশের মেয়েরা যে কোনো বাধা ডিঙিয়ে এগিয়ে যেতে পারে তা প্রমাণ করল নুসরাত। এ ব্যাপারে সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ও কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেনুবর রহমান বলেন, ওই ছাত্রীকে আলাদা কক্ষে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু মেয়েটি স্বাভাবিকভাবে অন্যদের সঙ্গে হলের বেঞ্চে বসেই পরীক্ষা দিয়েছেন।