একাত্তরের দুই অগ্নিকন্যা
সিতারার ভাষ্যে সেই দিনগুলো
রোকেয়া ডেস্ক
🕐 ১২:৪১ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৭, ২০১৯
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক অনন্য জায়গা দখল করে আছে ছন ও বাঁশের তৈরি এক হাসপাতাল। সে সময়ে এই হাসপাতালটিই আশা ও নির্ভরতার স্থান হয়ে উঠেছিল আহত মুক্তিযোদ্ধা ও অসুস্থ বাঙালিদের জন্য। ভারতের আগরতলার বিশ্রামগঞ্জে গড়ে ওঠা এই হাসপাতালে ডা. ক্যাপ্টেন সিতারা বেগমের যুদ্ধকালীন সময়ের অভিজ্ঞতাকে হুমায়ূন আহমেদ তার জোসনা ও জননীর গল্প উপন্যাসে তুলে ধরেছেন।
সিতারা বেগম নিজের জবানে বলছেন, আমাদের ওটি অর্থাৎ অপারেশন থিয়েটার ছিল প্লাস্টিক ক্লথ দিয়ে চারদিকে ঘের দেওয়া একটা ঘর। এর মেঝেও আবৃত ছিল প্লাস্টিক ক্লথে।
আমি ওখানে থাকার সময় কেবল দুজন রোগী ডায়েরিয়া-ডিসেন্ট্রিতে মারা গিয়েছিল। ভারতীয় আর্মিরও অনেক সৈন্য আসত এখানে চিকিৎসার জন্য। আমি আগরতলা আইএ হাসপাতালে মাঝে-মধ্যে যেতাম। ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছ থেকেও আমরা প্রচুর সাহায্য পেয়েছি। আমাদের রোগীদের মধ্যে বেশির ভাগই থাকত ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত।
একবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটা ট্রাক রাস্তার খাদে উল্টে পড়ে গিয়েছিল। ট্রাকটি সেনা সদস্যে ঠাসা ছিল। আহতদের আমাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে এনে এখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। জেনারেল রবি-এর হেলিকপ্টারে গুলি লেগেছিল। তিনিও এখানে চিকিৎসা গ্রহণ করেছিলেন।
যখন হাসপাতালে ছিলাম, তখনো বড় ভাই হায়দারের সঙ্গে দেখা করতে পারতাম না। অধিকাংশ সময় অসম্ভব ব্যস্ত থাকতেন তিনি। মাঝে সাঝে দেখা হতো। আব্বা-আম্মা মেলাঘর ক্যাম্পের কাছেই একটা মাটির ঘর ভাড়া নিয়ে মেঝেতে প্লাস্টিক ব্যাগ বিছিয়ে দিনরাত যাপন করতেন।