‘দে আর আস’
সিদ্দিকুর রহমান
🕐 ১০:০৩ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২০, ২০১৯
সারা পৃথিবীতে মুসলিম বিদ্বেষ যখন বিষাক্ত গ্যাসের মতো ছড়িয়ে পড়ছে তখন জাসিন্ডা আর্ডার্ন আবির্ভূত হলেন সেসবের বিরুদ্ধে। ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় অভিযুক্ত অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেনটন ট্যারান্টকে একদিকে যেমন সর্বোচ্চ শাস্তি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তেমনি মমতাময়ী অভিভাবকের মতো ছায়া হয়ে দাঁড়িয়েছেন হামলার শিকার মুসলমানদের পাশে। হামলাকারীর নাম উচ্চারণ না করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন তিনি।
জাসিন্ডা আর্ডার্ন। ১৮৫৬ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে কনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। শুধু এটা বললে কম বলা হবে। তিনি আসলে একজন সত্যিকারের নেতা। জাত, ধর্ম, বর্ণ-নির্বিশেষে মানুষকে কীভাবে আপন করে নিতে হয় তিনি জানেন। তার মুখেই একথা মানায়-‘সন্ত্রাসীর কোনো নাম নেই, ধর্ম নেই, সে সন্ত্রাসীই। নিউজিল্যান্ডের যে আইনি শক্তি আছে, হামলাকারীকে তার সর্বোচ্চটিরই মুখোমুখি হতে হবে।’
হামলার পর মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি যে সদয় সহানুভূতি দেখিয়েছেন তা সারা পৃথিবীর মানুষ দেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি সহানুভূতি এবং ভালোবাসা প্রকাশ কারার জন্য। তিনি বলেছেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি ভালোবাসা এবং সহানুভূতির মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমাদের সাহায্য করতে পারে।
জাসিন্ডার অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রকাশিত হয়েছে এই বক্তব্যে-‘মুসলমান ভাইবোনেরা, আমরা তোমাদের শোকের সাথী হয়তো হতে পারব না কিন্তু কথা দিচ্ছি, একসঙ্গে আমরা অনেকটা পথ হাঁটব।’ এই বক্তব্যের পর মানবতায় বিশ্বাসী মানুষ মাত্রই তার ওজন আর শীতলতাটা অনুধাবন করতে পারেন। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হয়েও একজন মানুষ কতটা অসাম্প্রদায়িক আর স্বহৃদয় হলে পার্লামেন্টে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে কথা শুরু করতে পারেন!
স্বজনহারা ব্যথিত মুসলিম নাগরিকদের ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে সম্ভাষণ করতে পারেন! মাথায় ওড়না দিয়ে তাদের জন্য শ্রদ্ধা নিবেদনের করতে পারেন! শাবাশ নেতা, শাবাশ মানবতা। শাবাশ জাসিন্ডা আর্ডার্ন। আপনার মতো মানুষে পৃথিবী ভরে যাক। আপনার মতো নেতার দেখা পাক পৃথিবীর প্রতিটি দেশ।