একুশের ভাষাকন্যা
অধ্যাপক শরিফা খাতুন
রোকেয়া ডেস্ক
🕐 ১২:৩৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৯
দেশভাগের পর ১৯৪৮ সালে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। এই ঘোষণার পর আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। নোয়াখালীতেও মিছিল হয়েছে বাংলা ভাষার পক্ষে। শরিফা তখন স্কুলছাত্রী। সে সময়ই তিনি মিছিলে অংশ নেন।
১৯৫১ সালে শরিফা ইডেন গার্লস কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হন। এখানে এসে আন্দোলনের সঙ্গে আরও শক্তভাবে যুক্ত হন শরিফা। বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে বাংলা ভাষার পক্ষে প্রচারণা চালান।
স্কুলছাত্রীদের সংগঠিত করেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ইডেন কলেজ প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেয়াল টপকে চলে আসেন আমতলায়, অমান্য করেন ১৪৪ ধারা।
ড. শরিফা খাতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগ থেকে ১৯৫৬ সালে অনার্স ও ১৯৫৭ সালে মাস্টার্স পাস করেন। ১৯৫৮ সালে শিক্ষকতায় যোগ দেন। পরে বিএড কোর্স সম্পন্ন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের কলারাডো স্টেট কলেজ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নেন ১৯৬৮ সালে। দেশে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। অবসরে যান ২০০২ সালে। তার ৪১টি গবেষণা প্রবন্ধ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
ড. শরিফা খাতুনের জন্ম ১৯৩৬ সালের ৬ ডিসেম্বর বর্তমান ফেনী জেলার শশ্মাদি ইউনিয়নে হলেও বাবার চাকরির সুবাদে আসামেই থাকা হতো ড. শরিফা খাতুনের।
ছোটবেলা কেটেছে আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের কোয়ার্টারে। সেখানকার চারপাশের জঙ্গলে ঘেরা পরিবেশেই তার শৈশব কাটতে থাকে। মা-বাবার স্নেহের ছায়াতে আজীবন কাটিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়, জানতেন শরিফা খাতুনের বাবা মোহাম্মদ আসলাম এবং মা জেবুন্নেছা চৌধুরানীও।
বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য আসামে ছিল না কোনো স্কুল। তাই মেয়েকে মাত্র ছয় বছর বয়সেই কুমিল্লায় তার সেজো খালার বাসায় রেখে যান মা-বাবা। এ শরিফাই বড় হয়ে অংশ নেন বাংলা ভাষাকে যথাযোগ্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করার মহান আন্দোলনে।