আত্মীয়কে লেখা চিঠি
রোকেয়া ডেস্ক
🕐 ১০:০৮ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৮
Sakhawat Memorial Girls’ School
86-a, lower circular road
8th Sept, 1915
স্নেহাস্পদা মরিয়ম,
তোমার ১৯শে আগস্টের প্রাণ জুড়ানো চিঠিখানা পাইয়া সুখী হইয়াছি। আমার মত জ্বলাপোড়া মরুভূমি তোমার মধুর স্নেহের যোগ্য নহে। তাই দেখ না, তোমার সরস চিঠিখানা মরুভূমি একেবারে শুষিয়াই লইয়াছিল।
চিঠি না লিখিবার একমাত্র কারণ সময়াভাব। বুঝিতেই পার এখন খোদার ফজলে পাঁচটি ক্লাস এবং ৭০টি ছোট-বড় মেয়ে, দু’খানা গাড়ী, দুই জোড়া ঘোড়া, সইস, কোচম্যান-ইত্যাদি সব দিকে একা আমাকেই দেখিতে হয়। রোজ সন্ধ্যাবেলা সইসেরা ঠিকমত ঘোড়া মলে কি না তাও আমাকে দেখিতে হয়। ভগিনীরে! এই যে হাড়ভাঙ্গা গাধার খাটুনী-ইহার বিনিময় কি, জানিস? বিনিময় হইতেছে ‘ভাঁড় লিপকে হাত কালা’ অর্থাৎ উনুন লেপন করিলে উনুন তো বেশ পরিষ্কার হয়, কিন্তু যে লেপন করে তাহারই হাত কালিতে কালো হইয়া যায়।
আমার হাড়ভাঙ্গা খাটুনীর পরিবর্ত্তে সমাজ বিস্ফারিত নেত্রে আমার খুঁটিনাটি ভুল ভ্রান্তির ছিদ্র অন্বেষণ করিতেই বদ্ধপরিকর। কচি মেয়েরা মা-বাপের কাছে নিজেদের বুদ্ধিমত যাহা বোঝে, তাহাই বলে। তাহা নিয়া একটু রঙ্গ হয়। এইরূপ সুখে দুঃখে একরকম চলিয়াছে ভালই। আমার ম্যাট্রিক পরীক্ষা কেয়ামতের পর দিন দেওয়া হইবে। এখন পড়া তৈরি করিতেছি।
তোমার স্নেহের ভগিনী
রোকেয়া