সম্মান দেওয়ার মালিক আল্লাহ
খোলা কাগজ ডেস্ক
🕐 ৯:৪০ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২১
বান্দাকে সম্মান দান করার ক্ষমতা শুধু মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের হাতে। তিনি যাকে খুশি সম্মান দান করেন এবং যাকে খুশি তার হাত থেকে সম্মান কেড়ে নেন। তাই ইমানদার মুমিন মুসলমান সম্মান প্রাপ্তির জন্য শুধু তারই ভরসা করেন।
এ প্রসঙ্গে সূরা আল ইমরানের ২৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘বল, হে আল্লাহ! তুমি সমুদয় রাজ্যের মালিক, যাকে ইচ্ছে রাজ্য দান কর আর যার থেকে ইচ্ছে রাজ্য কেড়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছে সম্মানিত কর আর যাকে ইচ্ছে অপদস্থ কর, তোমারই হাতে সবরকম কল্যাণ নিশ্চয়ই তুমি সকল বস্তুর উপর ক্ষমতাবান।’
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ কাফিরদের বন্ধু রূপে গ্রহণ করে সম্মান প্রাপ্তির প্রত্যাশা না করার জন্য কঠোরভাবে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘যারা মুমিনদের পরিবর্তে অবিশ্বাসীদের বন্ধু রূপে গ্রহণ করেন, তারা কি ওদের কাছে সম্মান আশা করেন? না, সকল সম্মানের মালিক আল্লাহ। (সূরা আন-নিসা: আয়াত :১৩৯) এ ব্যাপারে সতর্ক করে সূরা বাকারার প্রথমেই (২: ১৪ নং আয়াতে) আলোচিত হয়েছে যে, ‘মুনাফিকরা কাফেরদের কাছে গিয়ে বলত, আমরা তো প্রকৃতপক্ষে তোমাদের সাথেই আছি। মুসলিমদের সাথে আমরা তো হাসি-ঠাট্টা করি।’ অর্থাৎ কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব ও ভালাবাসা করলে সম্মান পাওয়া যাবে না। কারণ এটা আল্লাহর এখতিয়ারাধীন এবং তিনি সম্মান কেবল তার অনুসারীদেরই দান করে থাকেন।
তিনি অন্যত্র বলেছেন, কেউ সম্মান চাইলে জেনে রেখ, সব সম্মান আল্লাহরই জন্য। (সূরা ফাতির ৩৫: ১০) তিনি আরও বলেন, ‘সম্মান তো আল্লাহ, তার রাসুল এবং মুমিনদের জন্যই। কিন্তু মুনাফিকরা তা জানে না।’ (সূরা মুনাফিকুন ৬৩: ৮) অর্থাৎ, তারা মুনাফিক ও কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করে সম্মান কামনা করত। অথচ এটা হলো লাঞ্ছনা ও অপমানের পথ; ইজ্জত ও সম্মানের পথ নয়। এ আয়াতে কাফের ও মুশরিকদের সাথে আন্তরিক বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্য স্থাপন করাকে নিষিদ্ধ করে এ ধরনের আচরপে লিপ্ত ব্যক্তিদের প্রতি সতর্ক বাণী উচ্চারণ করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার উৎস ও মূল কারণ বর্ণনা করে একেও অযথা অবান্তর প্রতিপন্ন করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তারা কি ওদের কাছে গিয়ে ইজ্জত-সম্মান লাভ করতে চায়? তবে ইজ্জত-সম্মানতো সম্পূর্ণভাবে আল্লাহরই মালিকানাধীন।
কাফের ও মুশরিকদের সাথে সৌহার্দ্য ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক রাখা এবং অন্তরঙ্গ মেলামেশার প্রধান কারণ তাদের বাহ্যিক মানমর্যাদা, শক্তি-সামর্থ্য, ধনবলে প্রভাবিত হয়ে হীনমন্যতার শিকার হয় এবং মনে করে যে, তাদের সাহায্য-সহযোগিতায় তাদেরও মানমর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।
আল্লাহতায়ালা তাদের ভ্রান্ত ধারণা খ-ন করে বলেন, তারা এমন লোকদের সাহায্যে মর্যাদাবান হওয়ার আকাক্সক্ষা করছে, যাদের নিজেদেরই সত্যিকারের কোনো মর্যাদা নেই। তাছাড়া যে শক্তি ও বিজয়ের মধ্যে সত্যিকারের ইজ্জত ও সম্মান নিহিত, তা তো একমাত্র আল্লাহতায়ালারই মালিকানাধীন। অন্য কারো মধ্যে যখন কোনো ক্ষমতা বা সাফল্য পরিদৃষ্ট হয়, তা সবই আল্লাহপ্রদত্ত। অতএব, মানমর্যাদা দানকারী মালিককে অস্পষ্ট করে তার শত্রুদের থেকে ইজ্জত হাসিল করার অপচেষ্টা সত্যিকার অর্থেই বড় বোকামি।