বান্দার যে প্রশ্নে ব্যথিত হন আল্লাহ
খোলা কাগজ ডেস্ক
🕐 ১০:১৫ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৩১, ২০২০
বর্তমানে মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে প্রায় সবার মধ্যেই সাধারণ একটি মানসিক হতাশা রয়েছে। আমাদের অনেকের মনে প্রায়ই প্রশ্ন জাগে, ‘পৃথিবীতে এত দুঃখ-কষ্ট, এত খুনোখুনি, ক্ষুধা, রোগশোক ও অন্যায় যখন বিরাজ করছে, নিশ্চিতই যদি আল্লাহ থেকে থাকেন তবে কি তিনি তা দেখছেন না? এ সবকিছু সমাধান করা কি তার ক্ষমতার বাইরে?’
আবার কখনো ব্যক্তিগত পর্যায়ে কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে মনে প্রশ্ন জাগে, ‘আল্লাহ যদি আসলেই থাকতেন, তবে কেন আমি কিছু না করার পরও আমার চাকরি চলে গেল?’ অথবা, ‘কী এমন পাপ করেছিলাম যে, আমার আজ এই রোগ হলো?’ বিভিন্ন দুঃসহ পরিস্থিতিতে আমাদের চিন্তা জাগে, কেন আল্লাহ আমাকে এই পরিস্থিতিতে ফেললেন? শুধু অমুসলিমই নয়, বিশ্বাসী ঈমানদার মুসলমানদের মনেও অগোচরে এই চিন্তা চলে আসে। যখন কোন ব্যক্তি কোন সমস্যায় পড়ে, সে চিন্তা করতে থাকে, কেন আল্লাহ আমার সাথে এমন করছেন? কি এমন করেছি আমি? কেউ অসুস্থ হলে চিন্তা করে, ‘এমন কি গুনাহ আমি করেছি যে, আল্লাহ আমাকে এমনভাবে অসুস্থ করে দিলেন?’
কুরআনের প্রথম অধ্যায়, সূরা ফাতিহা যদি আমরা পাঠ করলে আমরা দেখি যে, আল্লাহ তাঁর নিজের পরিচয় দিচ্ছেন ‘রাব্বুল আলামীন’ অর্থাৎ সৃষ্টিজগতের অধিকর্তা হিসেবে।
আল্লাহ শুধু আমাদের সৃষ্টিকর্তা, আমাদের পালনকর্তা বা আমাদের প্রতি দয়া ও করুণার আধারই নন, তিনিই আমাদের প্রকৃত অধিকারী। সৃষ্টিজগতের সকল কিছুই তার অধীন।
সৃষ্টিজগতের অধিকর্তা হিসেবে সকল সৃষ্টির উপরই সৃষ্টির নিজস্ব অধিকারের চেয়ে বেশি আল্লাহর অধিকার রয়েছে। সৃষ্ট বস্তুটি তার নিজস্ব সৃষ্টির জন্য আল্লাহকে বিনিময় দেয়নি। আল্লাহই বরং নিজের অনুগ্রহে প্রতিটি বস্তু সৃষ্টি করেছেন।
যদি আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহারের কোন কম্পিউটার কাজ না করে বা নষ্ট হয়ে যায়, তবে আমরা তা বদলে নতুন কম্পিউটার আনি। এখানে পুরাতন কম্পিউটারটি আমাদের কাছে কোন প্রকার অভিযোগ করতে পারে না। কেননা, সেটি ছিল আমাদের অধীন। তার নিজস্ব কিছু সৃষ্টির জন্য আমরা তাকে তৈরি করিনি বরং আমরা আমাদের প্রয়োজনেই তা তৈরি করেছি। তেমনি বিশেষ উদ্দেশ্যে আল্লাহ আমাদের তৈরি করেছেন। আমাদের সৃষ্টিতে আমাদের নিজস্ব কোন ভূমিকা ছিল না। আমরা যে নেয়ামত উপভোগ করছি, তার সকল কিছুই আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন।
সুতরাং আল্লাহর প্রতি আমাদের কোন প্রকার অনুযোগ বা অভিযোগ থাকতে পারে না। বরং আমাদেরকে আল্লাহ যেই উদ্দেশ্যে তৈরি করেছেন, আমাদের উচিত সেই উদ্দেশ্যের প্রতি মনোযোগ দেওয়া।