আল্লাহ কেন বান্দার কাছে ঋণ চান?
খোলা কাগজ ডেস্ক
🕐 ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১৫, ২০২০
প্রশ্নটি করেছেন মোসাদ্দেক আলী, ভাবনাগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও
পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারায় আল্লাহ বান্দার কাছে ঋণ চেয়ে ইরশাদ করেন, ‘এমন কে আছে, আল্লাহকে ঋণ দেবে, উত্তম ঋণ; অতঃপর আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ-বহুগুণ বৃদ্ধি করে দেবেন। আল্লাহই সংকুচিত করেন এবং তিনিই প্রশস্ততা দান করেন এবং তারই নিকট তোমরা সবাই ফিরে যাবে। (সুরা বাকারা, আয়াত-২৪৫)।’
এই আয়াতে আমাদের প্রশ্ন হতে পারে, আমাদের কাছে আল্লাহর ঋণের কী প্রয়োজন? তিনিই তো আমাদের সবকিছু দান করেন এবং সৃষ্টিজগতের যাবতীয় বিষয়-আশয়ের মালিক তো তিনিই। এখানে আমাদের যে বিষয়টি বোঝার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তা হলো আল্লাহ এখানে নিজের জন্য অর্থ চাচ্ছেন না। বরং সমাজের পিছিয়ে পড়া দরিদ্র মানুষদের সাহায্য করার জন্য তিনি আমাদের রূপকভাবে এই ঋণ দিতে বলছেন।
মূলত আল্লাহই একমাত্র দাতা। তিনি আপনাকে প্রথম সম্পদ দান করেছেন। জীবনের সব নেয়ামতের মাধ্যমে আপনাকে পরিপূর্ণ করেছেন। এরপর তিনি নির্দেশ দিচ্ছেন, আপনাকে তার দেওয়া এই সম্পদ যেন আপনি নিজেই আঁকড়ে ধরে না থাকেন। বরং সমাজের অন্যদের প্রয়োজন পূরণের জন্যও আপনি যেন চেষ্টা করেন।
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয় কিয়ামতের দিন আল্লাহতাআলা তার কোনো বান্দাকে জিজ্ঞাসা করবেন, আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, তুমি আমাকে খাদ্য দাওনি, আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম, তুমি আমাকে পানি দাওনি। আমি রুগ্ণ ছিলাম তুমি আমার সেবা করনি!’
তখন বান্দা অবাক হয়ে বলবে- হে আমার রব, তুমি যে অভাবমুক্ত। তুমি খাও না, পান কর না, কেমন করে ক্ষুধার্ত, পিপাসার্ত ও রুগ্ণ হতে পার?
আল্লাহপাক বলবেন, ‘আমার অমুক বান্দা ক্ষুধার্ত হয়ে তোমার দুয়ারে হাজির হয়েছিল তুমি তাকে খাদ্য দাওনি, তাকে দিলে আমাকে দেওয়া হতো। তুমি পিপাসার্তকে পানি দাওনি, তাকে পানি দিলে আমাকে দেওয়া হতো। অসুখে রোগী কষ্টে ছটফট করেছে তার সেবা করলে আমাকে সেবা করা হতো, তুমি কি এটা জানতে না? (মুসলিম, হাদিস-২৫৬৯)।’