ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম

মাওলানা ইসমাঈল হোসেন
🕐 ৯:৫৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ০৪, ২০১৯

ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ ঈদুল ফিতরের নামাজের ছয় তাকবিরের সঙ্গে আদায় করছি এমন নিয়ত করে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত তুলে তাহরিমা বাঁধবেন। তারপর সানা (সুবহানাকাল্লাহুম্মা...) পুরোটা পড়বেন। এরপর আউজুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহর আগে তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলে তাকবির বলবেন। প্রথম দুবার কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে ছেড়ে দেবেন।

কিন্তু তৃতীয়বার বলে হাত বেঁধে নেবেন। প্রত্যেক তাকবিরের পর তিনবার সুবহানাল্লাহ বলতে হবে। তারপর আউজুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতেহা পড়ে একটা সূরা মেলাবেন। এরপর রুকু, সিজদা করে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াবেন। এবার অন্য নামাজের মতো বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতেহা পড়ে আরেকটা সূরা মেলাবেন।

তারপর তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলার মাধ্যমে তিনটা তাকবির সম্পন্ন করবেন। এখানে প্রতি তাকবিরের পর হাত ছেড়ে দেবেন এবং চতুর্থবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত না বেঁধে রুকুতে চলে যাবেন। এরপর সেজদা এবং আখেরি বৈঠক করে যথারীতি সালাম ফিরায়ে নামাজ শেষ করবেন।

ঈদের জামাত সম্পর্কীয় মাসআলা
মাসআলা-১ : ইমাম সাহেব জুমার মতো দুটি খুতবা দেবেন। তবে জুমার খুতবা দেওয়া ফরজ আর ঈদের খুতবা দেওয়া সুন্নত। কিন্তু ঈদের খুতবা শোনা ওয়াজিব। ওই সময় কথাবার্তা, চলাফেরা, টাকা উঠানো ইত্যাদি যেকোনো কাজ করা নিষেধ।

মাসআলা-২ : ঈদের নামাজের আগে মহিলা হোক কিংবা পুরুষ, বাড়িতে কিংবা মসজিদে অথবা ঈদগাহে নফল নামাজ পড়া মাকরুহ।

মাসআলা-৩ : সম্ভব হলে এলাকার সবাই একস্থানে একত্রে ঈদের নামাজ পড়া উত্তম। তবে কয়েক জায়গায় পড়াও জায়েজ।

মাসআলা-৪ : ঈদের নামাজ না পড়তে পারলে কিংবা নামাজ নষ্ট হয়ে গেলে তার কাজা করতে হবে না, যেহেতু ঈদের নামাজের জন্য জামাত শর্ত। তবে বেশকিছু লোকের ঈদের নামাজ ছুটে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে তারা অন্য একজনকে ইমাম বানিয়ে নামাজ পড়তে পারবেন।

মাসআলা-৫ : পহেলা শাওয়ালের দ্বিপ্রহরের আগে শরিয়তসম্মত কোনো কারণে ঈদের নামাজ না পড়তে পারলে শাওয়ালের ২ তারিখে পড়ার অনুমতি আছে। এরপর আর নামাজ পড়া যাবে না।

মাসআলা-৬ : কেউ ইমাম সাহেবকে দ্বিতীয় রাকাতে পেলে সালামের পর যখন ওই ব্যক্তি ছুটে যাওয়া রাকাতের (প্রথম রাকাত) জন্য দাঁড়াবে তখন প্রথমে সানা (সুবহানাকাল্লাহুম্মা), তারপর আউজুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়ে ফাতেহা ও কেরাতের পর রুকুর পূর্বে তাকবির বলবে। ফাতেহার আগে নয়।

মাসআলা-৭ : ইমাম তাকবির ভুলে গেলে রুকুতে গিয়ে বলবে, রুকু ছেড়ে দাঁড়াবে না। তবে রুকু ছেড়ে দাঁড়িয়ে তাকবির বলে আবার রুকুতে গেলেও নামাজ নষ্ট হবে না। বেশি লোক হওয়ার কারণে সহু সিজদাও দিতে হবে না।

মাসআলা-৮ : কোনো লোক যদি ইমাম সাহেবকে তাকবির শেষ হওয়ার পরে পায় সে তাকবিরে তাহরিমা বেঁধে প্রথমে ওয়াজিব তিন তাকবির বলে নেবে। আর রুকুতে পেলে যদি দৃঢ় বিশ্বাস হয় যে, তাকবির বলেও ইমাম সাহেবকে রুকুতে পাবে তাহলে তাহরিমা বেঁধে দাঁড়িয়ে তাকবির বলে নেবে, তারপর রুকুতে যাবে। আর দাঁড়িয়ে তাকবির পড়তে পড়তে ইমাম সাহেবকে রুকুতে না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে তাহরিমা বেঁধে রুকুতে চলে যাবে এবং রুকুর তাসবিহ না বলে প্রথমে তাকবির বলে নেবে, রুকুতে তাকবির বলার সময় হাত উঠাবে নাম এবং সময় পেলে রুকুর তাসবিহ পড়বে, না পেলে না পড়বে। আর তাকবির শেষ করার আগেই যদি ইমাম রুকু থেকে মাথা তুলে ফেলেন তাহলে মুক্তাদিও তুলে ফেলবে। তাকবির বাকি থাকলে তা ক্ষমাযোগ্য।

 
Electronic Paper