ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অপরাধ দমনে রমজানের ভূমিকা

যুবায়ের আহমাদ
🕐 ১২:০৭ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০১৯

তাকওয়া অর্থ আল্লাহভীতি। তাফসিরে এসেছে ‘আল্লাহর আদেশসমূহ পালন ও নিষেধগুলো থেকে বেঁচে থাকাই তাকওয়া।’ (তাফসিরে জালালাইন : ১/৯)। ব্যাপক অর্থে বলতে গেলে তাকওয়া তো মানুষের মনের আল্লাহর ভয়ে হালাল হারামের বিধানের প্রতি ওই শ্রদ্ধা ও ভীতি যা মানুষের আচার-আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে। প্রত্যেকটি মানুষের গোপনে অপরাধ করার প্রবণতা থাকে।

যেখানে পুলিশ কিংবা কোনো মানুষ পাহারা দিতে পারে না। সেই গোপন অপরাধের জায়গায় আল্লাহর ভয়ের অদৃশ্য পাহারাটাই হলো তাকওয়া। রোজার মাধ্যমে এই পাহারা মজবুত হবে। আইনের প্রতি মানুষ শ্রদ্ধাশীল হবে। অন্তরে তাকওয়া (আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ) নামক অদৃশ্য সিসি ক্যামেরার পাহারা বসাতে পারলেই সমাজ থেকে অপরাধ অনেকাংশে কমে যাবে।

রোজার মাধ্যমে পানাহারের মতো একটি বৈধ বা জায়েজ বিষয়কেও যখন অল্প সময়ের জন্য আল্লাহ নিষিদ্ধ করে দিলেন, সে নিষিদ্ধ বিষয়টিকে যেমন সে ‘না’ বলে প্রচণ্ড ক্ষুধার সময়েও পানাহার না করে আল্লাহর আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখায় তেমনি সব অপরাধকে ‘না’ বলে সেগুলোও ছেড়ে দেওয়ার বাস্তব প্রশিক্ষণ নিতে হবে রোজা থেকে। তবেই সে রোজাদারের রোজা পূর্ণ পুরস্কারের যোগ্য হবে। মানে হলো পবিত্র কোরআনে নিষিদ্ধ জিনিসগুলো ছেড়ে দেওয়ার প্রশিক্ষণ নিতে হবে। নিজেকে বিরত রাখতে হবে সব ধরনের মিথ্যা ও পাপাচার থেকে। কোরআনের শান্তির সমাজ গড়ার মিশন বাস্তবায়নের মতো যোগ্য ও তাকওয়াসম্পন্ন (মুত্তাকি) নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি পাপ, মিথ্যা কথা, অন্যায় কাজ ও মূর্খতাসুলভ কাজ ত্যাগ করতে না পারবে তার পানাহার ত্যাগ করাতে আল্লাহ তায়ালার কোনো প্রয়োজন নেই। (বোখারি : ৫/২২৫১)। সিয়াম কোরআনের আইনের প্রতি মানুষের মনে ভীতি ও শ্রদ্ধা তৈরি করবে সযতনে। রোজা পানাহারকে নিয়ন্ত্রণ করে আর অপরাধ প্রবণতাকে করে সমূলে উৎপাটন। রমজান শেষে পানাহার চালু হবে বটে কিন্তু অপরাধ থেকে বেঁচে থাকার যে বাস্তব প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা হয়েছিল তা চলবে সারা বছর।

রোজা অপরাধের হাত-পা মজবুতভাবে বেঁধে দেবে তাকওয়ার রশি দিয়ে। আল্লাহর ভয় (তাকওয়া) থাকলে রাতের অন্ধকারেও অন্যায় থেকে বিরত থাকা সম্ভব। মানুষের অন্তরে তাকওয়া বিধৌত সেই অদৃশ্য পাহারাই বসাবে রোজা। তাকওয়ার মাধ্যমে অপরাধ দমন হবে সমাজ থেকে। মানুষ বাঁচবে মানুষের অনিষ্ট থেকে। কেউ কারও ক্ষতি করবে না। প্রতিষ্ঠিত হবে শান্তির সমাজ।

লেখক : খতিব, বাইতুশ শফিক মসজিদ, বোর্ডবাজার, গাজীপুর

 

 
Electronic Paper