প্রশিক্ষণের মাস রমজান
মাওলানা মোবারক
🕐 ১:৩৫ অপরাহ্ণ, মে ১৫, ২০১৯
আল্লাহতায়ালা বান্দার আত্মগঠনের জন্য পবিত্র রমজান মাসকে রহমত, মাগফেরাত ও নাজাত দিয়ে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। এই মাস মুসলমানদের কাছে প্রশিক্ষণের মাস হিসাবেও পরিচিত। কারণ দীর্ঘ এক মাস দিনের বেলায় সব হালাল-হারাম খাদ্য গ্রহণ এবং যাবতীয় অশালীন কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখার মাধ্যমে এক ধরনের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়। সেই প্রশিক্ষণগুলো যেভাবে সম্পন্ন হয় তার একটি বিবরণ দেওয়া হলো
তাকওয়া সৃষ্টি : রোজা রাখার মাধ্যমে বান্দার হৃদয়ে আল্লাহর ভয় এবং ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি তোমাদের ওপর রোজাকে ফরজ করেছি যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার’ (আল কোরআন)। প্রচণ্ড ক্ষুধা তৃষ্ণায় একজন রোজাদার শুধু আল্লাহর ভয়ে পানাহার করে না, এটা দ্বারাই রোজায় তাকওয়ার প্রমাণ মেলে।
চরিত্র গঠন : রোজা রাখার মাধ্যমে মানুষ নৈতিক দৃঢ়তা অর্জন করতে পারে, চরিত্র সুন্দর হয়ে ওঠে। চরিত্র মানুষের অমূল্য সম্পদ, যার চরিত্র ধ্বংস হয়ে যায় তার সবকিছু শেষ হয়ে যায়। রোজা এমন এক ইবাদত যা মানুষের অন্তরে খোদাভীতি জাগ্রত করে তোলে এবং আত্মগঠনে উদ্বুদ্ধ করে, ফলে তার চরিত্র হয়ে ওঠে নির্মল।
সংযম ও আত্মনিয়ন্ত্রণ : মানুষের জীবনে সফলতা অর্জনের জন্য অন্যতম হাতিয়ার হলো সংযম ও আত্মনিয়ন্ত্রণ। ব্যক্তির জীবন গঠনের জন্য সংযমের গুরুত্ব অপরিসীম। যে ব্যক্তি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, সে কোনো দিন বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে পারে না। সেদিক থেকে রোজা সংযম ও আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রশিক্ষণ দেয়।
ধৈর্যশীলতা : রমজানজুড়ে ধৈর্যের প্রশিক্ষণ চলে। প্রচণ্ড ক্ষুধায়ও রোজাদার খাবার ছুঁতে পারেন না, তাকে ধৈর্য ধরতে হয় সূর্যাস্ত পর্যন্ত। ভীষণ পিপাসায়ও হাতের নাগালে থাকা ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি ছোঁয়া যাবে না। জৈবিক চাহিদা মেটানোর প্রবল আকাক্সক্ষা অন্তরে জেগেছে, সামনে প্রিয়তমা স্ত্রী থাকার পরও সংযত করতে হবে নিজেকে। এভাবে রমজানজুড়ে চলে প্রশিক্ষণ।
সাম্য প্রতিষ্ঠা : মানুষের মধ্যে কেউ ধনী, কেউবা গরিব। কিন্তু রোজা মানুষকে এক কাতারে নিয়ে আসে। আল্লাহর নির্দেশে উপোস থাকতে হয় ধনী-গরিব সবাইকেই। রোজা রাখার মধ্য দিয়ে ধনীরা গরিবের ক্ষুধার যন্ত্রণা উপলব্ধি করতে পারে।
মাওলানা মোবারক : ইসলামী চিন্তাবিদ। খতিব, বায়তুর রহমান জামে মসজিদ, কুমিল্লা