সম্পদ দুনিয়া ও মুমিনের অন্তর
মুহাম্মাদ ফয়জুল্লাহ
🕐 ২:১৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ০৫, ২০১৮
‘জনাব! যখন ঘরে নিত্যনতুন জিনিস আসে তখন অনেক আনন্দ অনুভব হয়। এটা কি দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসার আলামত?’
এ প্রশ্নের গুঞ্জন শেষ না হতেই উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে আরেকজন প্রশ্ন করলেন, সম্পদ জমা করা কি কোনো মন্দ কাজ?
সাধারণ মানুষদের তো এতে কিছু যায় আসে না তবে আমরা যারা আখেরাতকে উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে জীবনে বাঁচি, তাদের এ নিয়ে চিন্তা হয়। কিন্তু কী করা যায়, ভবিষ্যতের প্রয়োজনের জন্য কিছু সম্পদ জমা করা আমাদের অপারগতা!
এ দুটি প্রশ্ন দুইজন লোক করেছিলেন। কিন্তু তা ছিল উপস্থিত সবার প্রশ্ন। তাই সবাই অধীর আগ্রহে আল্লাহওয়ালা শাইখের অন্তর্দৃষ্টিপ্রসূত জবাবের অপেক্ষা করছিল।
বেশ কিছুক্ষণ কোনো জবাব এলো না। যখন নীরবতার বোঝা কানে ভারী হয়ে এলো, শাইখ তখন মাথা উঠিয়ে নিজেই আরেকটি পাল্টা প্রশ্ন করলেন- নৌকা কেন বানানো হয়?
প্রথম প্রশ্নকারী জবাব দিলেন, পানিতে চলার জন্য।
পানি যদি নৌকায় উঠে যায় তাহলে? শাইখ দ্বিতীয় প্রশ্নটি করলেন।
জবাব এলো, নৌকা ডুবে যাবে।
ব্যস! এ উদাহরণই মুমিন বান্দা, সম্পদ এবং দুনিয়ার সঠিক সম্পর্কের বর্ণনা করে দেয়। সম্পদ ও দুনিয়ার সম্পর্কে হাজারো প্রশ্ন জন্ম নিতে পারে, কিন্তু এ উদাহরণ স্মরণ থাকলে সব প্রশ্নের উত্তর আপনিতেই মিলে যায়।
মুমিনের অস্তিত্ব নৌকার মতো। দুনিয়া ছেড়ে দেওয়ার অনুমতি তার নেই। তাকে দুনিয়ায় বাঁচতে হবে যে এটাই পরীক্ষা।
কিন্তু সম্পদ ছাড়া বাঁচা যায় না। যেমন পানি ছাড়া নৌকা চলতে পারে না। নৌকার সবদিকে থাকে পানি। কিন্তু তার ভেতরে পানি থাকে না। আসলে পানি না থাকাই চাই।
এমনিভাবে মুমিনের সবদিকে দুনিয়া থাকে কিন্তু তার অন্তরে থাকে না। জিনিসপত্র তার ঘরে আসে, অন্তরে নয়।