কাউনিয়ায় কাউন চাষে বিমূখ কৃষক
প্রনোদনা দরকার
মোস্তাক আহমেদ, কাউনিয়া (রংপুর)
🕐 ৫:৫০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২২
ছোট দানা বিশিষ্ট শস্যটি এ দেশে গরীবের খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। সাধারণত চরা লে অথবা কম ঊর্বর জমিতে স্বল্প চাষে কাউনের চাষ করা হয়ে থাকে। কাউন একটি খরা সহিষ্ণু ফসল। রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় এক সময়ে ব্যাপক ভাবে কাউনের চাষ হতো।
কাউনের ব্যাপক চাষের কারনে এই উপজেলার নাম কাউনিয়া হয়েছে মর্মে প্রচলিত কথা রয়েছে। কাউন থেকে কাউনিয়া। সেই কাউনিয়ায় এখন আর কাউনের তেমন চাষাবাদ হয় না। ফলে কাউনিয়ার নাম করনের সার্থকতা ও কাউন চাষের ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে বয়স্ক মানুষের কাছ থেকে জানাগেছে এক সময়ে কাউনিয়ার আনাচে কানাচে বিশেষ করে চরা লে কাউনের চাষ হতো। রংপুর আ লের মানুষের আথিতিয়তার একটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছিল কাউন। গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় পায়েস, ক্ষীর, মলা, বিস্কুট তৈরীর উপাদানে কাউনের চাউলের কদর ছিল ব্যাপক। তাই ভোজন প্রিয়াসী গৃহস্থরা ধান চাষের পাশা পাশি কাউনের চাষ করতো।
চর নাজিরদহ গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হক জানান, তিনি ২৪শতক জমিতে কাউনের চাষ করে ৪ মন কাউন পেয়েছেন। কাউন চাষে তেমন কোন খরচ নাই, কোন সেচ দিতে হয় না। দোন (২৫শতক) প্রতি ১০ কেজি ইউরিয়া চাষের এক মাসের মধ্যে দিলেই হয়। কিন্তু এর সঠিক বাজার ব্যাবস্থাপনা না থাকায় চাষিরা কাউন চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
কৃষক শহিদার জানায় প্রায় সব ধরনের মাটিতেই কাউনের চাষ করা যায়। তবে পানি দাঁড়ায় না এমন বেল দোআঁশ মাটিতে এর ফলন ভালো হয়। অগ্রহায়ণ থেকে মাঘ মাস (মধ্য-নভেম্বর থেকে মধ্য-ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত বীজ বোনা যায়। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে বীজ বোনা হয়। কাউনের বীজ ছিটিয়ে ও সারিতে বোনা যায়। কাউন চাষে সচারাচর রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা হয় না। তবে অনুর্বর জমিতে কিছু সার প্রয়োগ করতে হয়।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, কাউনের তেমন চাষ না হওয়ায় এর চাষের সঠিক পরিসংখ্যান নাই।
কৃষি অফিসার শাহানাজ পারভীন জানান, চরাঞ্চলের কৃষকদের ধান চাষের পাশা পাশি কাউন সহ ভিন্ন ভিন্ন ফসলের চাষের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়ে থাকে। তিতাস জাতটি গোড়া পচা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন।
এলাকাবাসীর দাবী কাউনিয়র ঐতিহ্য কাউন, এ কাউন চাষ বৃদ্ধির জন্য সরকারের প্রনোদনা দেওয়া প্রয়োজন।