ফুলবাড়ীতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
🕐 ৬:৩৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২২
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এদের মধ্যে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্ক মানুষেরা। রোগীর ভিড়ের কারণে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, সীমান্ত ঘেষা উত্তরের জেলা দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে হিমেল হাওয়া আর কুয়াশায় আবারও বেড়ে গেছে শীতের তীব্রতা। সেইসঙ্গে সকালে কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে পুরো এলাকা। এ ছাড়া ঠান্ডা বাতাস শীতের তীব্রতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে ভিড় করছেন রোগীরা। প্রতিদিন এধরনের এক থেকে দেড়’শ রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এসব রোগীর মধ্যে প্রতিদিনই অন্তত ১০ থেকে ১৫ জন ভর্তি হচ্ছেন অন্তঃবিভাগে।
ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা গেছে,চলতি বছরের গত ৩ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুধুমাত্র ডায়েরিয়া আক্রান্ত ৯৪ জন রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে পুরুষ রোগী ৫১ জন এবং নারী ৪৩ জন রয়েছেন। বয়স ভেদে রোগী রয়েছেন শূন্য থেকে ১ বছরের মধ্যে ১৫ জন শিশু, ১ থেকে ৫ বছরের মধ্যে শিশু ৫৪ জন, ৫ থেকে ১৫ বছরের শিশু-কিশোর-কিশোরী ৪ জন এবং ১৫ বছরের উর্ধ্ব বয়সের ৩৬ জন রোগী রয়েছেন।
শীতে আক্রান্ত শিশুকে নিয়ে বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা গৃহবধূ রোজিনা বেগম বলেন, দু-তিন থেকে প্রচন্ড ঠান্ডা পড়েছে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে পাঁচ বছরের শিশু সন্তান ফাহিমের ডায়রিয়া হয়েছে। এতে করে বাচ্চার ডায়রিয়া হয়ে শরীর একেবারে দুর্বল হয়ে গেছে। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া ও খেলাধুলা করছে না। তাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎককে দেখাতে নিয়ে এসেছেন।
আরেক গৃহবধূ রানী বলেন, হঠাৎ করে তার তিন বছরের বাচ্চার ঠান্ডা লেগে জ্বর-সর্দি দেখা দিয়েছে। এ কারণে বাচ্চাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসেছেন।
হাসপাতালে ভর্তি দিনমজুর আব্দুল আলিম বলেন, শীতের মধ্যে কাজে বের হওয়ার কারণে ঠান্ডা লেগে নিউমোনিয়া দেখা দিয়েছে। এছাড়া দিনের মধ্যে ছয়-সাতবার পাতলা পায়খানা হচ্ছে, আবার পেটব্যথা করছে। তাই বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছি। ডাক্তার ঔষধ দেবার পর তা খেয়ে এখন একটু ভালো লাগছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. চামেলী বেগম বলেন, শীত জনিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে এসময় বেশি শীতে গরম কাপড় পরিধান করতে হবে। ভিটামিন সি ও শীতকালীন শাকসবজি খাওয়া ছাড়াও বয়স্ক ও শিশুদের গরম পানি পান করতে হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মশিউর রহমান বলেন, শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে শীত বেড়ে গেছে। রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মাঝে অনেকাংশে কমে গিয়েছিল। শীতের কারণে বয়স্ক ও শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি। তারা শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনি বলেন রোগী বাড়ার কারণে চিকিৎসা সেবা দিতে চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। একই সঙ্গে করোনার আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে,তাই সকলকে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এবং জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।