কাউনিয়ায় কমিউনিটি বীজতলায় ঝুকছে কৃষক
মোস্তাক আহমেদ, কাউনিয়া (রংপুর)
🕐 ৪:৩৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২২
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় কৃষকপ্রিয় হচ্ছে কমিউনিটি বীজতলা। ইতোমধ্যে এই উপজেলায় কৃষি বিভাগের পরামর্শে ৫১৫ হেক্টর জমিতে আদর্শ বীজতলায় বোরো ধানের চারা উৎপাদন হয়েছে। কৃষি নির্র্ভর বাংলাদেশের সার্বিক কৃষি উন্নয়ন এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্জনে বাস্তবমুখী নানা পদক্ষেপ নিলেও নানা সময় বীজ ও চারা সংকটের কারণে কৃষকরা নানা সমস্যায় পড়েন। এ সমস্যা সমাধানের জন্য কৃষি ব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছে আদর্শ (কমিউনিটি) বীজতলা।
আদর্শ বীজতলায় উৎপাদিত ধানের চারা যেকোন বৈরী আবহাওয়া মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়। সুস্থ সবল চারা উৎপাদন ও কোল্ড ইনজুরির ঝুঁকি কম। বীজতলা থেকে চারা তোলার সময় শিকড়ে মাটি ধরে না, ফলে চারাগুলো কোন আঘাত পায় না। জমিতে রোপণের পর শতভাগ চারা জীবিত থাকে এবং অল্প সময়ে বেড়ে উঠে। চারা সবল থাকায় ধানের ফলনও বৃদ্ধি পায়। সাবেকী কৃষি পদ্ধতির চেয়ে এ পদ্ধতিতে বীজের পরিমাণ কম লাগে। ফলে কৃষকের খরচও কম হয়।
জানা গেছে, আদর্শ (কমিউনিটি) পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনের নিয়মাবলি, প্রথমে শুকনো জমি ভালভাবে চাষ করে জৈব ও রাসায়নিক সার একবারে প্রয়োগ করতে হবে। জমি প্রস্তুত হলে ২ হাত প্রস্থ এবং ইচ্ছেমতো দৈর্ঘ্য নিয়ে বেড তৈরি করতে হবে। মানসম্মত বীজ সংগ্রহ করে সেগুলো পানিতে ২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে বীজগুলো তুলে ভেঙে নিয়ে বীজতলায় সমভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে। বীজ ছিটানোর পরে আলতো করে মাটি নেড়ে ঢেকে দিতে হয়। ২৫/৩০ দিনের মধ্যে চারাগুলো রোপণের উপযুক্ত হয়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বলছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার একটি পৌরসভা সহ ৬টি ইউনিয়নে প্রায় ৫১৫ হেক্টর জমিতে আদর্শ বীজ তলার মাধ্যেমে চারা বীজ প্রস্তত করা হয়েছে।
উপজেলার নিজপাড়া গ্রামের কৃষক সহিদার রহমান ও গংগানারায়ন গ্রামের গোপাল জানান, বাব দাদার আমলের পদ্ধতির চেয়ে আদর্শ পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করলে বীজ, শ্রম, সার, জায়গা ও সেচ খরচ অনেকাংশে কম লাগে এবং সুস্থ সবল চারা পাওয়া যায়। উপজেলার শাহাবাজ গ্রামের কৃষক সাহেদ আলী ও হাসেন আলী জানান, সনাতন পদ্ধতিতে যে জায়গায় ৫০ কেজি বীজ প্রয়োজন হতো সেখানে আদর্শ পদ্ধতিতে ৩৫ থেকে ৪০ কেজি বীজ লাগে। ফলে বীজতলা তৈরিতে খরচ কম হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানাজ পারভীন। তিনি খোলা কাগজকে জানান, কৃষকদের কমিউনিটি (আদর্শ) বীজতলার বিষয়ে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। এছরাও কোল্ড ইনজুরি দেখাদিলে ১০ লিটার পানিতে ৬০ গ্রাম থিয়োভিট, ৬০ গ্রাম জিপসাম এবং ৮০ গ্রাম পটাশ মিশিয়ে ৫শতক পরিমান জমির বীজ তলায় স্প্রে করার পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। আশা করছি চলতি মৌসুমে কাউনিয়া চারা বীজের সংকট হবে না।