ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সরব বিএনপি, আ.লীগে ত্যাগীরা

হাসান বাপ্পি, ঠাকুরগাঁও
🕐 ১০:৩৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০১৮

দরজায় কড়া নাড়ছে একাদশ সংসদ নির্বাচন। তফসিলের পর শুরু হবে মূল ভোটযুদ্ধ সম্ভাব্য প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের ঘুম উধাও। এ নিয়ে আমাদের নিয়মিত আয়োজন

নির্বাচনী হাওয়া ক্রমেই বাড়ছে উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে। গত ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠাকুরগাঁও বড়মাঠের জনসভায় জেলার ৩টি আসনেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চান। অপরদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন। এ অবস্থায় নেতাকর্মীদের নজর অন্যদিকে থাকলেও দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিয়মিত এ জেলায় আসছেন। বক্তব্য, গণসংযোগ, দলীয় সভা-সমাবেশ করছেন। যা গণমাধ্যমেও আসছেন গুরুত্বসহকারে। এ জেলার মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। আর ঠাকুরগাঁও-১ আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ২১ হাজার ৬২২ জন।
নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখছেন। পাশাপাশি নিজ    নিজ সংসদীয় আসনে গণসংযোগ চালাচ্ছেন। তাদের শুভেচ্ছাসহ পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে জেলার অলিগলিতে।
ঠাকুরগাঁওয়ে ৩টি আসন রয়েছে। একটিতে বিএনপির একক ও শক্ত প্রার্থী থাকলেও দুটিতেই আওয়ামী লীগে রয়েছে একাধিক প্রার্থী। এ প্রার্থীদের মধ্যে কারও যেমন বিগত সময়ে ঠাকুরগাঁওয়ের রাজনীতিতে সফল পদচারণা তেমনি রয়েছে; আবার কারও কারও নানা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগবাণিজ্যসহ ভিন্ন সম্প্রদায়ের জমি দখল করার মতো কেলেঙ্কারি রয়েছে। এবার ১৪ দলীয় জোট থেকে ডজন খানেক নেতা দৌড়ঝাঁপ করেছেন।
আসনটিতে বিএনপি থেকে নির্বাচন করবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন। জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান জানান, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কোনো প্রতিদ্ব›দ্বী নেই এখানে। মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন জেএসডির জেলা সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাবের সদ্য নির্বাচিত সভাপতি মনসুর আলী। জাতীয় পার্টি থেকে জেলার সাধারণ সম্পাদক তরুণ নেতা রেজাউর রাজি স্বপন চৌধুরী। আসনটিতে জামায়াতের ৪৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার ভোট রয়েছে। তবে হিন্দু ভোটারকে কাছে না টানতে পারলে বিএনপির আসনটি উদ্ধার করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করেন স্থানীয় বিশ্লেষকরা। আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত হলেও বর্তমান এমপির কিছু কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ দলীয় অনেক নেতাকর্মী।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের মতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁওয়ের ৩টি আসনে যোগ্য প্রার্থী মনোনয়নে ব্যর্থ হলে ভরাডুবি হতে পারে ক্ষমতাসীন দলের। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিজয় ছিনিয়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট দখলে নিতে পারে আসন ৩টি। বর্তমানে ঠাকুরগাঁও-১ ও ঠাকুরগাঁও-২ আসন দুটি আওয়ামী লীগের এবং ঠাকুরগাঁও-৩নং আসনটি ওয়ার্কার্স পার্টির দখলে রয়েছে। মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অরুনাংশু দত্ত টিটো। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ সাদেক কুরাইশী, সহ-সভাপতি মকবুল হোসেন বাবু, আইনবিষয়ক সম্পাদক ইন্দ্র নাথ রায়, কেন্দ্রীয় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক রাজিউর রেজা খোকন চৌধুরী, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাহমিনা আক্তার মোল্লা প্রমুখ নেতা।
সার্বিক বিষয়ে রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রাস্তাঘাট ও বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। এর আগে কেউ এত উন্নয়ন করতে পারেননি। এ হিসাবে তিনি মনোনয়ন পেলে বিপুল ভোটে জয়লাভের আশা করছেন।
মনোনয়নপ্রত্যাশী বর্তমান সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অরুণাংশু দত্ত টিটো বলেন, তিনি ১৯৯৬ সালে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ২০০৫ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি দলের সমর্থনে প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু নিজ দলের কয়েকজন নেতা গোপনে তার বিরোধিতা ও ষড়যন্ত্র করায় তিনি হেরে যান। এবার মনোনয়ন পেলে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন।

 
Electronic Paper