ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নিরাশ হয়ে ফিরলেন স্বজনরা

হাসান বাপ্পি, ঠাকুরগাঁও
🕐 ১:৫৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৫, ২০২১

নিরাশ হয়ে ফিরলেন স্বজনরা

ঠাকুরগাঁওয়ে এবারো হলো না মিলনমেলা। জেলার হরিপুর উপজেলায় কুলিক নদীর পারে ঐতিহ্যবাহী পাথরকালি মেলা উপলক্ষে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে দুই বাংলার হাজারো মানুষ তাদের স্বজনদের সাথে কুশল বিনিময় করতে আসে। কিন্তু এবার মেলা না হওয়ায় নিরাশ হয়েই ফিরে যেতে হয়েছে দুপারের স্বজনদের।

 

নিয়ম অনুযায়ী হরিপুরের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ৬নং ভাতুড়িয়া ইউনিয়নের মাকড়হাট ক্যাম্পের ৩৪৬ পিলার সংলগ্ন টেংরিয়া গোবিন্দপুর গ্রামে গত শুক্রবার (০৩ ডিসেম্বর) হওয়ার কথা ছিল এ মিলনমেলা। মেলাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে এসে ভিড় জমায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ। সে মোতাবেক বাঙালি আত্মীয় স্বজনরা তাদের প্রিয়জনদের জন্য জিনিসপত্র নিয়ে কাঁটাতারের দু’পাশে অবস্থান করলেও ভিরতে পারেনি কাঁটাতারের কাছে।

জানা যায়, প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের শুক্রবার লাখো মানুষের সমাগমে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ-ভারত মিলনমেলা হয়ে থাকে। কয়েক যুগ ধরেই এখানে পাথরকালি মেলার আয়োজন করছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। কালীপূজার পরে ওই এলাকায় বসে এই পাথরকালি মেলা।

মেলাকে ঘিরে একদিনের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। দুই বাংলার মানুষ আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করে। আত্মীয় স্বজনদের জন্য নিয়ে আসা জিনিসপত্র কাঁটাতারের উপর দিয়ে ছুড়ে দেয় স্বজনদের উদ্দেশ্যে।

এর আগেও করোনার ভাইরাস সংক্রমণের কারণে মিলনমেলার আয়োজন করা হয়নি। এবারো একই কারণে মেলার আয়োজন করেনি কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে কঠোর অবস্থানেই থাকে দুপাড়ের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী।

স্বজনের সাথে দেখা করতে আসা সামাদ মাস্টার বলেন, আত্মীয় স্বজনদের সম্প্রীতি স্থাপনে প্রতিবছরে এ পূজাকে কেন্দ্র করে কাঁটাতার ধরে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু এবার সেটাও হলো না।

নিজের ভাইকে দেখতে আসা মনসুর বলেন, আপনজনদের দেখার জন্য এক বছর অপেক্ষা করে থাকি। নিজের ভাই পরিবারসহ ওপারে থাকে। গত বছরও দেখা করতে পারিনি। এবার আশা ছিল ভাইয়ের মুখ দেখতে পারব। কিন্তু তা আর হলো না।

মেয়ে এবং নাতনির জন্য নিজ হাতে বানানো পিঠা নিয়ে আসা আমেনা বেগম বলেন, নাতনির বয়স ৩ বছর। গত বছরেও দেখিনি, এবারো দেখা হলো না। মেয়ে, জামাই, নাতনির জন্য নিজের হাতে পিঠা বানিয়ে কি লাভ হলো; এখন এই পিঠা কে খাবে?

পূজা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নগেন কুমার পাল বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে মিলনমেলা করা সম্ভব হয়নি। শুধু পূজা পালন করা হয়েছে।

হরিপুরের গোবিন্দপুর ও চাপাসার ক্যাম্পে কর্মরত সীমান্ত বাহিনীর সদস্যরা জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে এবার মিলনমেলা বন্ধ করে দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এবং কাঁটাতারের কাছে কোনো বাংলাদেশী যেন না যায় সে বিষয়ে আমাদের জানিয়েছে।

 

 
Electronic Paper