কথা রাখেনি কেউ
তোফায়েল হোসেন জাকির, সাদুল্যাপুর (গাইবান্ধা)
🕐 ৬:৫৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১
যখন জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিংবা স্থানীয় সরকার নির্বাচন শুরু হয়, তখন নদীপারে বৃদ্ধি পায় নেতাকর্মীদের আনাগোনা। নির্বাচনী প্রার্থীরা অবিরাম ছুটে চলেন ঘাঘট তীরের মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। এ সময় সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন তারা। তবে কথা রাখেননি কেউ। নির্বাচিত হওয়ার পর আর দেখা মেলেনা তাদের। এভাবে যুগ যুগ কেটে গেছে মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে। ফলে জীবনের ঝুঁকিতে কাঠের সাঁকো দিয়েই চলাচল করছে ১০ গ্রামের মানুষ।
শনিবার গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের শ্রীরামপুর এলাকার ঘাঘট নদের ওপরে দেখা গেছে একটি নড়বড়ে কাঠের সাঁকোর চিত্র। এ সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষরা চলাচল করছিলেন ওই ভাঙা সাঁকো দিয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নলডাঙ্গা ও রসুলপুর ইউনিয়নের বুক চিরে বয়ে যাওয়া ঘাঘটের শ্রীরামপুরের কাটানদীর মুখ স্থানে একসময় ডিঙি নৌকায় মানুষ পারাপার করতেন। এতে দুর্ভোগে পড়েছিলেন শত শত মানুষ। এই ভোগান্তি নিরসনে এলাকাবাসীর অর্থায়নে নির্মাণ করা হয় কাঠের সাঁকো। দুই বছর আগে প্রায় লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে সাঁকো নির্মাণ করা হলেও সেটি এখন ভেঙে নড়বড়ে অবস্থা বিরাজ করছে। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে প্রায় ১০ গ্রামের মানুষ।
ঘাঘটের পশ্চিম এলাকার রহমতপুর, তেঁতুলিয়া ফরিদপুর, পদ্মপুকুর, রসুলপুর, ছান্দিয়াপুর এবং পুর্ব এলাকার বামনডাঙ্গা, সাহবাজ, নলডাঙ্গা, খামার দশলিয়া ও মিয়ার বাজারের মানুষ ওই সাঁকোর ওপর দিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করে থাকেন। এরই মধ্যে সাঁকোটির বাঁশ-কাঠ নষ্ট হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও উভয় পারের মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে ছুটে চলেছে এপার থেকে ওপারে। শুধু সাধারণ মানুষই নয়, স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদেরও একমাত্র ভরসা ওই সাঁকো। বর্তমানে ভাঙাচোরা এই সাঁকো দিয়ে চলতে গিয়ে হরহামেশাই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে করে প্রাণহানির আশঙ্কা করছে ভুক্তভোগীরা।
রসুলপুর এলাকার পথচারী আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে নলডাঙ্গা বন্দরসহ বিভিন্ন স্থানে ছুটতে হয় এই ভাঙা সাঁকোর ওপর দিয়ে। এখানে সেতু নির্মাণ করা হবে, যুগ যুগ ধরে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছেন জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু আজও বাস্তবায়ন হয়নি সেই প্রতিশ্রুতি। এই স্থানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, ঘাঘটের কাটানদীর মুখ স্থানে গ্রামবাসীর চাঁদার টাকা দিয়ে দুই বছর আগে নির্মাণ করা হয় বাঁশ-কাঠের সাঁকো। সেটি এখন ধীরে ধীরে অকেজো হয়ে পড়ছে। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে মানুষরা। সম্প্রতি পুনঃসংস্কারের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে এলাকাবাসী। সংস্কারের অর্থ জোগানে মাইকিং করে টাকা আদায় করা হচ্ছে।
সাদুল্যাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাহারিয়া খান বিপ্লব বলেন, ইতোমধ্যে ঘাঘটের কাটানদী মুখ স্থানটি পরিদর্শন করা হয়েছে। এখানে সেতু নির্মাণ বিষয়ে সংশ্লিষ্টকে জানানো হয়েছে।