ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সাধারণের হাতে অসাধারণ কাজ

সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
🕐 ১২:২৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৩, ২০২১

সাধারণের হাতে অসাধারণ কাজ

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়নের দক্ষিণ সাথালিয়া গ্রামের আমিন মিয়ার স্ত্রী শিল্পি বেগম সাধারণ হাত দিয়ে অসাধারণ কাজ করছেন। জানা গেছে, সাঘাটা উপজেলায় এক নামে যাকে চেনেন, সে হলো কার্টন আপা শিল্পি। পিত্রালয়ে টাকার অভাবে তিনি স্কুলের গণ্ডি পার হতে পারেননি। স্কুলের বই-খাতা ফেলে যাকে যেতে হয়েছিল স্বামীর ঘরে। স্বামীর অসুস্থ হওয়ায় নিতে হয় সংসারের দায়িত্ব। ২০০৩ সালে নওগাঁ জেলায় বেড়াতে গিয়ে একজনের কার্টন তৈরি করা দেখে তার মনে স্বপ্ন জাগে, সে যদি পারে আমি পারব না কেন। বাড়িতে এসে শিল্পি শপিং নামে ব্যবসা দাঁড় করান।

উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে পায়ে হেঁটে ঘুরে হোটেল, কসমেটিকসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কাজ অগ্রিম অর্ডার নেন। প্রতিদিন বগুড়া গিয়ে করতোয়া পেপার হাউজ থেকে মালামাল নিয়ে সাথালিয়া নিজ বাড়িতে আসেন। রাত ২টা পর্যন্ত হাতের কাজ করে সকালে তৈরি কাগজের কাটুনগুলো স্বামী-স্ত্রী মিলে ভ্যান গাড়ি যোগে দোকানগুলোতে রাত ৯টা পর্যন্ত দিয়ে আসেন। এভাবেই দিনে ৩শ থেকে ৪শ টাকা আয় দিয়ে চলে তাদের সংসার।

তার স্বপ্ন এক ছেলেকে ডাক্তার বানাবেন। প্রথম ছেলে আসাদুজ্জামান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্নাস (বাংলা) বিভাগে লেখা পড়া করছেন। অপর ছেলে সোহানুর রহমান সাঘাটা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণিতে পড়ছে। তিনি কষ্ট করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।

যমুনা নদী ভাঙনে জমি-জমা বিলীন হয়েছে আগেই। ৫ শতাংশ জমির উপর বসত ঘড় উঠিয়ে কোনোমতে বসবাস করছেন। এটুকুই হয়তো নদী গিলে খাবে আতঙ্কে দিন কাটে। এ করোনায় লকডাউনে কীভাবে সংসার চলবে এটাই দুশ্চিন্তা তার। এদিকে তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ঋণ নিয়েছেন। কিস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। ছেলের লেখাপড়ার খরচ দিতে পারছেন না।

শিল্পি বেগম বলেন, সরকার এবং বিত্তবান কেউ যদি আর্থিক সহযোগিতা করতো তাহলে আমি একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতাম। সেখানে নারীদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হতো।

 
Electronic Paper