ইটভাটার গ্যাসে পুড়ছে ধান
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
🕐 ৩:৫২ অপরাহ্ণ, মে ১১, ২০১৮
কুড়িগ্রামে একটি ইটভাটার ছেড়ে দেওয়া বিষাক্ত গ্যাসে প্রায় দেড়শ বিঘা জমির বোরো ধান সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। এতে করে ওই এলাকার শতাধিক কৃষক ফসল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুড়িগ্রাম সদরের ঘোগাদহ ইউনিয়নের রসুলপুর ব্রহ্মতর গ্রামে কৃষি জমিতে এবারই প্রথম থ্রি-স্টার ব্রিকস নামে একটি ইটভাটা চালু করে স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী। সম্প্রতি গভীর রাতে ভাটার ইট পোড়ানো শেষে ভাটার চুল্লির মুখ খুলে দেওয়া হয়। এতে করে বিষাক্ত গ্যাস বেরিয়ে ওই এলাকার প্রায় দেড়শ বিঘা জমির উঠতি বোরো ফলসসহ গাছপালা ও বাঁশ বাগান পুড়ে যায়। পরে কৃষকরা ধান ক্ষেতে গিয়ে দেখেন তাদের ধান ক্ষেত পুড়ে গেছে ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে। প্রথম দিকে ভাটা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে তা স্বীকার করেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, অনেক কষ্টে ধার-দেনা করে তারা বোরো আবাদ করেছেন। ধান ঘরে তোলার আগে তাদের সব আশা শেষ হয়ে গেছে। ভাটা মালিক ক্ষতিপুরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
রসুলপুর ব্রহ্মতর গ্রামের কৃষাণী হাসিনা বেওয়া জানান, ধার-দেনাসহ অন্যের বাড়িতে কাজ করে বন্ধকি পৌনে দুই বিঘায় এবার ধান আবাদ করেছিলেন। ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে তার ধান ক্ষেত পুড়ে গেছে। এ ক্ষেত থেকে খড় ছাড়া কিছুই পাওয়া যাবে না। স্বামীহারা এ বিধবা চোখের পানি ফেলে জানান, আগামী দিনগুলো কীভাবে চলবে তা নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন।
একই গ্রামের রাজু আহমেদ, হাসু মিয়া, ছকিনা বেগম ও ফাতেমা বেগম জানান, গত বন্যায় এ এলাকায় এক ফোটা ধানও ঘরে তুলতে পারেননি। এবার অনেক আশা ছিল ঘরে ধান তুলবেন। কিন্তু ইটভাটার কারণে সে আশা এখন আর নেই। তারা ভাটার মালিকের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন। থ্রি-স্টার ব্রিকসের ম্যানেজার আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, আমরা এবারই প্রথম নতুন ভাটা করেছি। ইট পোড়ানো শেষে ভাটার অদক্ষ ফায়ারম্যানের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। থ্রি-স্টার ব্রিকসের মালিক পক্ষের ইসমাইল হোসেন ইটভাটার গ্যাসে ধান ক্ষেত পুড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন।