ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

একতা সেতুতে মরণ বাঁক, শঙ্কা দুর্ঘটনার

মোস্তাক আহমেদ, কাউনিয়া (রংপুর)
🕐 ৭:৫৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৫, ২০২১

একতা সেতুতে মরণ বাঁক, শঙ্কা দুর্ঘটনার

রংপুরের কাউনিয়ায় হারাগাছ ইউনিয়নে মরা তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত স্বপ্নের একতা সেতুর উত্তর প্রান্তের সংযোগ সড়কে সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে এমনভাবে মরণ বাঁক নির্মাণ হয়েছে এবং রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ায় ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করতে পারলেও বাস, ট্রাক চলাচল করতে পারবে না আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। সেই সঙ্গে বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে অহরহ। এ কারণে উদ্বোধনের আগেই এলাকাবাসী সেতুতে সংযোগ সড়কটির মরণ বাঁক পরিবর্তন করে ও রাস্তা প্রশস্ত করার দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরের নিকট।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) উপজেলা দফতর সূত্রে জানা গেছে, ২ কোটি ৩৫ লাখ ২৯ হাজার ৪৩৪ টাকা ব্যয়ে ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য ৫.৫০ মিটার প্রস্থ স্পেন গার্ডারের ওপর মরা তিস্তা নদীর ওপর একতা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২৪/০১/২০১৮ সালে। সেতুর নির্মাণকাজ ২২/০৭/২০১৯ সালে শেষ হওয়ার কথা, তা বৃদ্ধি করে ৩০/০৫/২০২০ করা হলেও সৈকত-আলমগীর জাহান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে সেতুর নির্মাণকাজ আজও শেষ হয়নি।

জানা গেছে, বাণিজ্যমন্ত্রী সময় দিলেই বাকি কাজ শেষ করে উদ্বোধন করা হবে। কাঠামোগত সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও সঠিক নিয়মে নদী শাসন না করার কারণে সেতুর উত্তর প্রান্তে সংযোগ সড়কটি এমনভাবে মরণ বাঁক তৈরি ও সংর্কীণভাবে তৈরি করায় ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করতে পারলেও বড় যানবাহন চলাচল করতে পারবে না বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। সেই সঙ্গে এই বাঁকে দুর্ঘটনা নিত্যদিনের হবে এমন আশঙ্কা যানবাহন চালকদের। সেতুতে উঠতে এবং নামতে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় সেতু নির্মাণের উপকার থেকে বঞ্চিত হবে এলাকাবাসী।

এছাড়াও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হারাগাছ বকুল তলা থেকে একতা বাজার পর্যন্ত রাস্তাটি পাকা হওয়ার কথা থাকলেও দৃশ্যত তা দেখা যাচ্ছে না।

লালমনিরহাটের রাজপুর, খলাইঘাট, চিনাতুলী, ঠিকানার হাট, কাউনিয়ার হারাগাছ ইউপির চর নাজিরদহ, পল্লিমারী, চর চতুরা গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ একতা সেতুর ওপর দিয়ে উপজেলা-জেলাসহ বিভিন্ন স্থানে চলাচল করবে। এ ছাড়াও ওই এলাকাগুলো কৃষি শষ্যভা-ার হিসেবে খ্যাত। কৃষিপণ্য পরিবহনে এই সেতুর ওপর দিয়েই ট্রাকে মালামাল পরিবহন করতে হবে। তাই সেতুর উত্তর প্রান্তে জমি অধিগ্রহণ করে সংযোগ সড়কটি প্রশস্ত করে সেতুর বাঁক কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি এলাকাবাসীর।

হারাগাছ ইউপি চেয়ারম্যান রকিবুল হাসান পলাশ জানান, সংযোগ সড়কটি প্রশস্ত ও সেতু থেকে আরও ২০ফিট বৃদ্ধি করে বাঁক দেওয়া প্রয়োজন, তা না হলে বাস ট্রাক চলাচল করতে গেলেই দুর্ঘটনা লেগেই থাকবে। ফলে এলাকাবাসী সেতুর কাক্সিক্ষত সুফল থেকে বঞ্চিত হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়া জানান, সেতুর উত্তর প্রান্তে সংযোগ সড়কের এত বাঁক দেওয়া ঠিক হয়নি, এতে যান চলাচলের সময় দুর্ঘটনা অধিক পরিমাণে ঘটবে।

উপজেলা প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জেমি জানান, সেতুর উত্তর প্রান্তে সংযোগ সড়কের জায়গা না থাকায় এমন বাঁক হয়েছে। নির্মাণের পর তাদের কাছেও ক্রটি ধরা পড়েছে কিন্তু জমি অধিগ্রহণ ছাড়া এটি সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও ব্যাক্তি মালিকানার জমি নিয়ে কাজ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে সংযোগ সড়কটি প্রশস্ত করে বাঁক কমানোর পদক্ষেপ গ্রহণের।

ইউএনও উলফৎ আরা বেগম জানান, সমস্যাটি আমার চোখেও ধরা পরেছে, মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জমি অধিগ্রহণ করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। এলাকাবাসী বাণিজ্যমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে স্বপ্নের একতা সেতুর মরণ বাঁক কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।

 
Electronic Paper