দিনাজপুরে ঝুঁকিপূর্ণভাবে এলপি গ্যাস বিক্রি
এস, এ স্বপন, দিনাজপুর
🕐 ৮:১৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০২১
দিনাজপুর জেলার সর্বত্রই নিয়ম না মেনে গড়ে উঠেছে যত্রতত্র এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান। মুদি দোকান, ব্যাটারি, হার্ডওয়্যার, কসমেটিকস, অ্যালুমিনিয়ামের দোকানেও দেদারছে বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার। আর যে দোকানগুলোতে শুধু বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস তারাও মানছেন না কোনো নিয়ম নীতি। ঝুঁকিপূর্ণ ওই গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানগুলোতে নেই অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা।
আর বিস্ফোরক অধিদফতর, স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস কিংবা সংশ্লিষ্ট দফতরের নেওয়া হয়নি কোনো অনুমোদনও। দিনাজপুর সদরসহ প্রায় প্রতিটি উপজেলায় ও গ্রামের হাটবাজারগুলোতেও কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই যত্রতত্র খোলা হচ্ছে এলপি গ্যাস বিক্রয়ের দোকান।
অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা না রেখে ঝুঁকিপূর্ণ এমন দোকান খোলায় উদ্বিগ্ন আশপাশের দোকান ও বাসাবাড়ির মালিকরা। এমন দৃশ্য অধিকাংশ এলপি গ্যাসের দোকানে। বর্তমানে বাসাবাড়ি কিংবা হোটেল রেস্তোরাঁয় প্রতিনিয়তই বাড়ছে এলপিজি সিলিন্ডারের চাহিদা। আর এই চাহিদাকে পুঁজি করে শহর, শহরতলী ও গ্রাম এলাকায়ও নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে এলপিজি সিলিন্ডারের দোকান।
জানা যায়, খুচরা ব্যবসায় ক্ষেত্রে বিস্ফোরক অধিদফতরের লাইসেন্স ছাড়াই ১০টির বেশি সিলিন্ডার না রাখার বিধান থাকলেও এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে লাইসেন্সবিহীন এসব দোকানে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে ওই জ্বালানি। আইনের তোয়াক্কা না করে ওই সকল দোকানিরা শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই চালাচ্ছেন শহর ও গ্রাম এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এই ব্যবসা।
বাসা, বাড়ি, দোকান ও সড়কের পাশের এসব দোকানে অনিরাপদে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয়ের ফলে আশঙ্কা রয়েছে বিস্ফোরণ, অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানির মতো ঘটনা। প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা চালালেও তা বন্ধে নেই গৃহীত কোনো প্রকার পদক্ষেপ। এলপিজি গ্যাস কোম্পানিগুলোর ডিলাররা বিস্ফোরক অধিদফতরের লাইসেন্স নিলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা সিলিন্ডার মজুত আইন অনুসরণ করছে না।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কোনোরূপ নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়াই বিক্রি হচ্ছে এলপি সিলিন্ডার গ্যাস। আর গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারকারীরাও নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়েই বাসাবাড়ি কিংবা হোটেলে ব্যবহার করছেন। দোকানগুলোতে দেখা যায় অমেরা, বসুন্ধরা, টোটাল, পদ্মা, যমুনা, লাফাজসহ বিভিন্ন দেশীয় কোম্পানির প্রস্তুতকৃত সিলিন্ডারের গায়ে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে বিভিন্ন দোকানে দেখা যায় অনেক কোম্পানির সিলিন্ডারের গায়েই উৎপাদন কিংবা মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস ডিফেন্সের স্টেশন মাস্টার জানান, যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার রাখা ও বিক্রি অতীব ঝুঁকিপূর্ণ। কোনো দোকানে বহনযোগ্য ফায়ার স্টিং নেই। কোনোভাবে একটি সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হলে আশেপাশের সব সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হতে পারে। যা পানি দিয়ে নেভানো সম্ভব নয়। এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে বিস্ফোরক অধিদফতরের লাইসেন্স ও সংশ্লিষ্ট ফায়ার সার্ভিসের কার্যালয় থেকেও ছাড়পত্র নেওয়ার বিধান রয়েছে।