ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

লুটেরাদের স্বার্থে চিনিকল বন্ধের সিদ্ধান্ত সরকারের

রংপুর অফিস
🕐 ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০২১

লুটেরাদের স্বার্থে চিনিকল বন্ধের সিদ্ধান্ত সরকারের

দেশে চিনির চাহিদা বছরে প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন। সেখানে ১৫টি চিনিকলে গত মৌসুমে উৎপাদন হয়েছে মাত্র ৬০ হাজার মেট্রিক টন। অথচ সরকার এই বিপুল পরিমাণ চাহিদার কথা বিবেচনায় না নিয়ে পাটকলের ন্যায় দেশি-বিদেশি লুটেরাদের স্বার্থে চিনিকল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রংপুর জেলার একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ব ভারী শিল্প কারখানা ‘শ্যামপুর চিনিকল’ বন্ধের প্রতিবাদে গতকাল বুধবার দুপুরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন-সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। শ্যামপুর চিনিকল রক্ষা কমিটির আয়োজনে বেলা সাড়ে ১১টায় রংপুর নগরীর কাচারি বাজার চত্বরে এ মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, লোকসানের অজুহাতে পূর্বঘোষণা ছাড়াই চলতি মৌসুমে বাংলাদেশ চিনি এবং খাদ্যশিল্প করপোরেশন শ্যামপুরসহ দেশের ছয়টি চিনিকলে উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। আখ মাড়াইয়ের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন থাকা সত্ত্বেও সরকারি সিদ্ধান্তে এখানকার আখ ৬৫ কিলোমিটার দূরে জয়পুরহাট চিনিকলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জয়পুরহাট চিনিকলে প্রতিদিন যে পরিমাণ আখ ক্রয়ের কথা, ওই পরিমাণ আখ ক্রয় করা হচ্ছে না। ইতোমধ্যে আখের পরিণত বয়স ১৪ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। এভাবে জয়পুরহাট চিনিকলে এখানকার উৎপাদিত আখ নিতে অন্তত ৬ মাস সময় লাগবে। ফলে আখ মরে শুকনো খড়িতে পরিণত হবে।

তারা আরও বলেন, পরিবহন খরচ ও আখ মাড়াইয়ে বেশি সময় নেওয়ায় আখের রস শুকিয়ে যাওয়া, রাস্তায় নানা ধরনের ঝুঁকির কারণে আখচাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আধুনিকায়নের মাধ্যমে চিনিকল চালুর দাবি জানিয়ে নেতারা চিনিকলের লোকসানের জন্য লুটপাট-দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার ও শাস্তির জোর দাবি জানান। সেই সঙ্গে লাভজনক দামে কৃষকের কাছ থেকে আখ ক্রয় এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা, পেনশন পরিশোধেরও দাবি জানান ও চিনিকলকে কেন্দ্র করে বহুমুখী শিল্প গড়ে তোলার তাগিদ দেন। দাবি মানা না হলে আগামী ২৪ জানুয়ারি আখ চাষি, চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীসহ সর্বস্তরের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রংপুর নগর থেকে বদরগঞ্জ পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে তা সফল করতে আখচাষ অঞ্চলসহ রংপুরের বিভিন্ন স্থানে হাটসভা,পথসভা, জনসংযোগ, মিছিল, মিটিংসহ নানা কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন নেতারা।

শ্যামপুর চিনিকল রক্ষা কমিটির সমন্বয়ক কমরেড আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে এবং আনোয়ার হোসেন বাবলুর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদত হোসেন, অশোক সরকার, কুমারেশ রায়, শাহীন রহমান, গৌতম রায়, ডা. অধ্যাপক সৈয়দ মামুনুর রহমান, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হককানী, মনিরুজ্জামান, উমর ফারুক, আমিনউদ্দিন বিএসসি, আখচাষি আলতাফ হোসেন, পুষ্প রঞ্জন বর্মণ, জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।

এছাড়াও সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন- দীপক রায়, শেখর রায়, মোফাখখারুল ইসলাম নবাব, জুবায়ের আলম জাহাজী, মজিবর রহমান, অ্যাডভোকেট ইলিয়াস আহমেদ। সমাবেশ শেষে বহুমুখী ও আধুনিকায়ন করে শ্যামপুর চিনিকল চালুর দাবিতে রংপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর ৪ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি পেশ করা হয় এবং একটি বিক্ষোভ মিছিল মহানগরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে শাপলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

 
Electronic Paper