ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বুড়ির বাঁধে মাছ ধরা

হাসান বাপ্পি, ঠাকুরগাঁও
🕐 ১০:১১ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২০

ভোরেই খুলে দেওয়া হয় বুড়ির বাঁধের গেট। চাবিজাল, খেয়াজাল, টানাজাল বা ছেঁকাজাল নিয়ে ছুটে আসেন আশপাশের মানুষ। লেগে পড়েন মাছ ধরায়। শত শত মানুষের মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় মিলন মেলা। নারী, পুরুষের সমন্বিত মাছধরা উৎসবে বাদ যায়নি শিশু ও বৃদ্ধরাও। কাদায় মাখামাখি হয়েও আমোদে মাছ ধরতে দেখা যায় তাদের। আর যারা একেবারেই অনভ্যস্ত, তারা ভিড় করেন উৎসাহ দিতে। এমনইভাবে কেটে যায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ও আকচা ইউনিয়নের শুক নদীর বুড়ির বাঁধে ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরা উৎসব।

জানা যায়, ১৯৮০ সালের দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য সদর উপজেলার আচকা ও চিলারং ইউনিয়নের মাঝামাঝি এলাকায় শুক নদীর ওপর একটি জলকপাট (সুইসগেট) নির্মাণ করা হয়। জলকপাটে আটকে থাকা সেই পানিতে প্রতি বছর মৎস্য অধিদফতরের উদ্যোগে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়া হয়। আর শীতের শুরুতেই বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ার পর মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবেই প্রতি বছর চলে বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার উৎসব।

বুড়ির বাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য মানুষ মাছ ধরতে ব্যস্ত। এদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে। বাদ যাননি বৃদ্ধরাও। কারও হাতে পলো, কারও হাতে চাবিজাল, খেয়াজাল, টানাজাল বা ছেঁকাজাল। যাদের মাছ ধরার সরঞ্জাম নেই তারাও বসে নেই। খালি হাত দিয়েই কাঁদার মধ্যে মাছ খুঁজছেন। আর নদীর পাড়ে হাজারো মানুষ ভিড় করে দেখছিলেন মাছধরা। গত শনিবার দিনব্যাপী চলে এই উৎসব।

জেলা মৎস্য অধিদফতরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আব্দুল আজিজ জানান, প্রতিবারই জুলাই মাসের দিকে এই বুড়ির বাঁধ এলাকায় আমাদের উদ্যোগে পোনা ছাড়া হয়। শীতের শুরুতে বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়া হয়। সে সময় মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় বাঁধ। এভাবেই বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার উৎসব এ অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী হয়ে উঠেছে।

 
Electronic Paper