ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সাদুল্যাপুরে এক মাসে ‘উধাও’ ২৩ মেয়ে

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
🕐 ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ০১, ২০২০

সেপ্টেম্বর মাসে একে একে ২৩ মেয়ে ‘উধাও’ হয়েছেন। এর মধ্যে একজন দুই সন্তানের জননী। আর বাকিরা অষ্টম থেকে ডিগ্রি শ্রেণির ছাত্রী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোবাইল ফোনের অপব্যবহারের ফলে এমনটা হয়ে থাকতে পারে। তাদের দাবি মোবাইল ফোনের সহজলভ্যতার কারণে সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে এমন ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার উপজেলা পরিষদের মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় এ তথ্য তুলে ধরেন সাদুল্যাপুর থানার ওসি মাসুদ রানা। তিনি বলেন, প্রেমঘটিত কারণে এ উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এখন বাড়তি চিন্তা করতে হচ্ছে।

এসব ঘটনায় একজনের অভিভাবক থানায় অপহরণ মামলা করেছেন। অন্যদের অভিভাবক থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) অথবা পুলিশের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আরিফুর রহমান কনকের সভাপতিত্বে এই মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভা শুরু হয়। এতে আলোচনা করেন উপজেলা চেয়ারম্যান সাহারিয়া খান বিপ্লব, থানার ওসি মাসুদ রানা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহিনুল ইসলাম মণ্ডল, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বসুনিয়া, শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিস শাফি, সমাজ সেবা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র রায়, খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোফ্ফাখারুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাহানাজ আক্তার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল সরকার, জাতীয় পার্টির সভাপতি আজিজুল ইসলাম, জাসদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ আজমী, প্রেস ক্লাব সভাপতি শাহজাহান সোহেল, হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের রনজিত কুমার অধিকারী, নাগরিক কমিটির সভাপতি আবুল বাশার মো. আব্দুল হান্নান পিন্টু, ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন সরকার, সামছুল আলম মাস্টার, রফিকুল ইসলাম মণ্ডল নওশা ও রবিউল করিম দুলা।

সভায় উপজেলার মহিপুর কলেজের প্রভাষক রনজিত কুমার অধিকারী বলেন, অপ্রাপ্ত বয়সের শিশু-কিশোরদের হাতে অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোন তুলে দেওয়ায় সমাজে অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে। অভিভাবক মহল সচেতন না হওয়ায় বিপদগামী হচ্ছে শিশু-কিশোররা। এই ফোনের মাধ্যমে তারা ফেসবুক ব্যবহার করে অথবা কথা বলে প্রেমে জড়িয়ে পড়ছে। আর এই বয়সের প্রেমের কারণে পরিবারের অজান্তে তারা বাড়ি ছাড়ছে।

সাদুল্যাপুর থানার ওসি মাসুদ রানা সভায় বলেন, এই মুহূর্তে এখানকান বড় আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে মোবাইল প্রেম। অবুঝ শিশুরা কিছু বুঝে উঠার আগেই ফেসবুকে অথবা মোবাইল প্রেমে জড়িয়ে অজানার উদ্দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। তারা বাবা-মাসহ বাড়ির অন্য কারও সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে না।

এ শিশুদের অনেকের পরিবার লোকলজ্জার ভয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পর্যন্ত জানাতে চান না। আবার কোনো অভিভাবক থানায় এলেও সাধারণ ডায়েরি করেই চুপ থাকতে চান। এভাবে সেপ্টেম্বর মাসে এই উপজেলার ২৩ জন মেয়ে বাড়ি ছাড়া হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একজনের অভিভাবক অপহরণ মামলা করেছেন। অন্যান্য অভিভাবক সাধারণ ডায়েরি অথবা মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাহানাজ আক্তার বলেন, শিশু-কিশোরদের মোবাইল প্রেম অথবা ফেসবুক আসক্তি বন্ধ করতে কাউন্সিলিং জরুরি হয়ে পড়েছে। করোনার কারণে এখন যেহেতু বিদ্যালয় বন্ধ তাই আমরা চেষ্টা করব গ্রামে গ্রামে ঘুরে শিশু-কিশোরদের সচেতন করে তুলতে। একই সঙ্গে এ ব্যাপারে অভিভাবক মহলের সচেতন হওয়া জরুরি।

 
Electronic Paper