ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিরল স্থলবন্দরের রেললাইন আধুনিক করার প্রতিশ্রুতি

সুলতান মাহমুদ, দিনাজপুর
🕐 ৯:০৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ০৬, ২০২০

করোনাভাইরাসের কারণে গোটা বিশ্ব আজকে থমকে গেছে সঙ্গে বাংলাদেশও রয়েছে উল্লেখ করে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, আমাদের দেশের মানুষ দুর্যোগ মোকাবেলা করায় অভ্যস্ত। গতকাল সোমবার দিনাজপুরের বিরল রেলস্টেশনের উদ্বোধন ও বিরল স্থলবন্দরের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনের সম্ভাব্যতা পরিদর্শন শেষে এক সুধী  সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

রেলমন্ত্রী আরও বলেন, এক সময় বাংলাদেশের মানুষের খাদ্যের খাটতি ছিল কিন্তু এখন আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন আমাদের ২৪ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য উদ্বৃত্ত রয়েছে। বিএনপি জামায়াত সরকার একসময় রেল যোগযোগ ব্যবস্থাকে সংকুচিত করেছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে রেল মন্ত্রাণালয় গঠন করেন। তখন থেকেই রেল যোগযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। এখন আরও বেশি আধুনিক করা হয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, যমুনা ব্রিজের ওপর দিয়ে আলাদাভাবে রেল ব্রিজ নির্মাণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এ বছরের মধ্যেই যমুনা ব্রিজের ওপর দিয়ে রেল ব্রিজের কাজ শুরু হবে এবং ডাবল লাইনের রেল ব্রিজ হবে। জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত রেলের ডাবল লাইনের কাজ হবে। বিরল স্থলবন্দরে আধুনিক মানের একটা রেল লাইন করা হবে। আরও তিন চারটা লাইন তৈরি করা হবে। যাতে এখানে রেলের মালামাল লোড আনলোড করতে পারি। এটা যেহেতু রেল মন্ত্রণালয় ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কাজ আমার বিশ্বাস আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে এই কাজটা সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।   

ভারতের রাধিকাপুর থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত রেল সংযোগ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ভারতের রাধিকাপুর থেকে দিনাজপুরের বিরল স্থলবন্দর-হার্ডিঞ্জ রেল সেতু- খুলনা হয়ে মোংলা পর্যন্ত রেল লাইন যাবে।

দিনাজপুরের বিরল রেল স্টেশনের উদ্বোধন ও বিরল স্থলবন্দরের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনের সম্ভাব্যতা পরিদর্শন শেষে এক সুধী সমাবেশে তিনি এ সব কথা বলেন।

খালিদ মাহমুদ বলেন, মোংলা বন্দরে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০টি জাহাজ আসা যাওয়া করে। এ বন্দরকে আরও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় ভারত আট হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত রেললাইন হচ্ছে। এর ফলে ভারত ও নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি-রফতানিতে বাণিজ্যিক সুবিধা হবে।

বিরল স্থলবন্দরের বিষয়ে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে বিরল স্থলবন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ২০০৮ সালে দিনাজপুরে নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, বিরলে স্থলবন্দর হবে। ইশতেহার বাস্তবায়ন করে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। ২০০৯ সালে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করেন। সেসময় তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেছিলেন, রাধিকাপুর-বিরলে রেল যোগাযোগের বিষয়ে। তারই ধারাবাহিকতায় বিরল থেকে রাধিকাপুর ডুয়েল গেজ রেলপথ স্থাপিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, করোনার সময়ে গোটা বিশ্বের উন্নয়ন যখন থমকে দাঁড়িয়েছে; বাংলাদেশ তখন এর ব্যতিক্রম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বে আমরা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে করোনাও মোকাবেলা করে যাচ্ছি। উন্নয়ন-অগ্রগতিও এগিয়ে নিচ্ছি। এর মধ্যেই আমাদের বাজেটও পাস হয়েছে।

বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ প্রশাসক আজিজুল ইমাম চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম, পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, বিরল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিনাত রহমান, বিরল স্থলবন্দর পরিচালনা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সইদুর রহমান পাটোয়ারী মোহন, পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন, বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রমাকান্ত রায়।

 
Electronic Paper