ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কোয়ারান্টিনে অব্যবস্থাপনা

নীলফামারী প্রতিনিধি
🕐 ২:০৫ অপরাহ্ণ, মে ২৫, ২০২০

নীলফামারীতে অব্যবস্থাপনায় চলছে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টিন। সমন্বয়হীনতায় কোয়ারান্টিন কেন্দ্র এবং মানুষের সঠিক সংখ্যা নিয়েও দেখা দিয়েছে বিভ্রান্তি। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে খাদ্য যোগানের দায়হীনতা। এমন অব্যবস্থাপনায় লক্ষ্যবিচ্যুতি ঘটেছে উদ্যোগটির। তবে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, শুধু জেলা, উপজেলা প্রশাসনই নয় পুলিশ, আর্মি, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনায় আছেন। এটি হলো সকলের সমন্বিত প্রয়াস। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সবাই এগিয়ে আসুন।

কোয়ারান্টিন কেন্দ্রে থাকা অনেকের সামর্থ আছে। তারা যদি বাড়ি থেকে এনে খেতে চান, খেতে পারেন। বিষয়টির সঙ্গে প্রশাসন, পুলিশ, আর্মি একাই সম্পৃক্ত না। সবার অংশগ্রহণে এ কাজটি চালিয়ে যেত হবে।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে সদর উপজেলার কুন্দপুকুর ইউনিয়নের শালহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে কোয়ারান্টিনের আছেন ১১০ জন। অথচ গত শনিবার বিকেলে কেন্দ্রটিতে গিয়ে মিল পাওয়া যায়নি সে তথ্যের। এলাকাবাসী জানায়, ৩৯ জনের একটি গ্রুপকে কোয়ারান্টিনে রাখা হয়েছিল গত ২২ এপ্রিল। গত ৬ মে তাদের কোয়ারান্টিন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই দিন আগে ছেড়ে দেওয়া হয়। একই কেন্দ্রে সম্প্রতি রাখা হয়েছিল সাত জনের একটি গ্রুপকে। পাঁচদিন পর ছেড়ে দেওয়া হয় তাদের।

ওই ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ মোজাফ্ফর হোসেন জানান, এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৩৯ জনের গ্রুপটিকে ১২ দিন পর্যন্ত রাখা সম্ভব হয়েছিল। এরপর খাদ্য সংকট দেখা দিলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। একই কারণে সাতজনের গ্রুপটিকেও পাঁচ দিনের মাথায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

ইউপি সদস্য সহির উদ্দিন বলেন, প্রথম দফার ৩৯ জনের খাওয়া খরচ বাবদ উপজেলা প্রশাসন থেকে ২০ কেজি চাল, দুই লিটার তেল, চার কেজি লবণ, দুই কেজি চিনি, চার কেজি চিড়া, পাঁচ কেজি ডাল ও দুই প্যাকেট নুডলস পাওয়া গেছে। এরপর স্থানীয় সংসদ সদস্যে আসাদুজ্জামান নূরের পক্ষ থেকে ৭০ কেজি চাল, ৪০ কেজি আলু, আট কেজি ডাল, দুই কেজি লবণ পাওয়া যায়। সেটি শেষ হওয়ার পর স্থানীয় একটি দোকান থেকে বাকিতে ১৭ হাজার টাকার মালামাল কিনে তাদের খাওয়ানো হয়। দোকানের ওই টাকার সিংহভাগই আমি পরিশোধ করেছি। অবশিষ্ট অংশ এলাকার মানুষের সহযোগিতায় পরিশোধ করা হয়েছে। খাদ্য যোগানের অনিশ্চয়তায় ৩৯ জনকে ১৪ দিন রাখা সম্ভব হয়নি। পরের সাতজনকেও পাঁচ দিনের মাখায় ছেড়ে দিতে হয়েছে।

একই অবস্থা ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের শালমারা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। গত ২ মে থেকে সেখানে কোয়ারান্টিনে রয়েছেন তিন পরিবারের ১৩ জন। ওই কেন্দ্রে অবস্থানরত সুজন শর্মা বলেন, আমরা ঢাকা থেকে নিজ এলাকায় এসেছি। যা সম্বল নিয়ে এসেছি দুই দিনের মধ্যে শেষ হয়েছে। নয় দিন অতিবাহিত হলেও ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ১০ কেজি চাল ও দুই কেজি আলু পেয়েছি। এলাকার মানুষের সহযোগিতা নিয়ে কোনোভাবে দিন কাটাচ্ছি।

লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের ককই বড়গাছা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গত ৬ মে থেকে কোয়ারান্টিনে আছেন ১০ জন। চাঁদপুরে ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করে তারা ফিরেছেন বাড়িতে। সেখানেও বিরাজ করছে খাদ্য সংকট।

 
Electronic Paper