ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

করোনা যুদ্ধে মাঠে পুলিশ

আদিতমারী (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
🕐 ৪:০৩ অপরাহ্ণ, মে ২৪, ২০২০

সময়ের সাহসী যোদ্ধা হিসেবে দেশ সেবায় মানুষের পাশে থেকে সেবা দিয়ে পুলিশ আরেকধাপ এগিয়ে। পুলিশ সম্পর্কে জনগণের মাঝে যে ধারণা ছলি সেটাকে প্রমান করতে পুলিশ বর্তমান পরিস্থিতিতে কাজ করছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার চার যুগ পর পুলিশ কখনও মানুষের সেবা করতে পারেনি। এখন একটা সুযোগ এসেছে সেটাকে কাজে লাগিয়ে পুলিশ মরণকে সামনে রেখে করোনা যুদ্ধে মাঠে নেমেছে। তারা বর্তমানে দেশের আইনশৃঙ্খলার পাশাপশি দেশ সেবায় প্রানঘাতী করোনা প্রাদুর্ভাব রোধে দেশব্যাপী রাষ্ট্রের অতন্দ্র প্রহরী পুলিশকে সরকার কাজে লাগাচ্ছে। আর তারা সরকারের আদেশ মান্য করে দেশের ও জনগণের কথা ভেবে দিনরাত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

৭১ সালে যেমন পাকিস্থানীর বিরুদ্ধে মুক্তিবাহিনীরা যেভাবে দেশকে শত্রুমুক্ত করতে যেমন লড়ছিল-আজ সারাবিশ্ব কোভিড-১৯ করোনার যুদ্ধ চলছে ঠিক এই সময়ে বাংলাদেশে মুক্তিবাহিনীরমত কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। করোনা প্রতিরোধে বিদেশফেরত ও এক জেলার লোক অন্য জেলায় আগমন রোধে খবর শুনা মাত্রই লাল পতাকা হাতে ছুটে গিয়ে তাদের বাড়ি লকডাউনসহ খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন।

আবার দেখা যায় কখন কর্মহীন, দুস্থ, অসহাদের বাড়ি, বাড়ি ত্রাণ সহায়তা করছেন আবার মানুষকে বাড়িতে থাকতে ও রাস্তা ঘাটসহ হাটে-বাজারে লোক সমাগম এড়াতে সামাজিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে সচেতনতা করতে দিন-রাত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুলিশ সদস্যরা কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। যেখানে একজন করোনায় আক্রান্ত হলে আত্মীয়-স্বজন ও মানুষ পর্যন্ত তাদের আশেপাশে যাই না অথচ সেখানেই পুলিশ যাচ্ছে।

তারা নিজের জীবনকে বিলিয়ে দিয়ে এই সংকটময় মূহুর্তে মানুষের পাশে থেকে সেবা দিচ্ছে। করোনার আতঙ্কে অজ্ঞাত লাশের পাশে যখন কেউ নেই, তখন পুলিশকে ওই লাশের পাশে দাঁড়াতে হয়। লাশের দাফনের সব ব্যবস্থা করতে হয়। যেখানে একজন করোনায় আক্রান্ত হলে মানুষ আশেপাশে যাই না অথচ সেখানেই আইনশৃঙ্খলার পাশাপশি উল্কার মত ছুটে যাচ্ছে পুলিশ।

একজন মানুষ যখন ১৮ ঘণ্টা পরিশ্রম করে একটু বিশ্রাম নেয় কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে পুলিশের সেই ভাগ্য নেই। কখনো প্রচ- গরমে ইউনিফর্ম পরে, ঘামে ভিজে, আবার কখনো বৃষ্টিতে ভিজে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত থাকতে হয়। সারাদিন ইউনিফর্ম পরে ঘামের ক্লান্তি নিয়ে জনগনের সেবা শেষে পরিবার পরিজনদের সঙ্গে একটু ক্লান্তিময় পরিত্রাণ পেত। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই পরিত্রাণ তাদের ভাগ্য জোটে না।

পার্থক্যটা এখানে, আমরা করোনা মোকাবিলায় ঘরে আর তারা বাইরে। আমরা প্রিয়জনের সান্নিধ্যে আর তারা জীবনের ঝুঁকিতে। তারা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছে। আর আমরা অসচেতনতায় আক্রান্ত হচ্ছি। ইতিমধ্যে করোনা মোকাবিলায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশের তিন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। অনেকে আবার আক্রান্ত হয়েছে। তারপরও দায়িত্ব থেকে পুলিশ থেমে নেই।

আমার প্রশ্ন পুলিশ কেন একাই যায়? আমাদের কি দায়িত্ব নেই? তাদের কেন একার দায়িত্ব? যেখানে আল্লাহতালা আমাদের একই রক্তে মাংসে গড়ায় সৃষ্টি করেছে সেখানে কাহারো ভেদাভেদ নেই। আসুন আজ দেশের এই ভয়াবহ সংকটময় মূহুর্তে পুলিশের পাশাপাশি নিজেরাও কাজ করি দেশকে করোনা শত্রুমুক্ত করি।

আদিতমারী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, পুলিশ সম্পর্কে মানুষের মাঝে যে একটা ধারণা ছিল সেটাকে কাটিয়ে উঠতে আজ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এর আগে কখনও মানুষের সেবা করতে পারেনি। তাই সময় এসেছে মানুষের পাশে থেকে সেবা করার দরকার। এর আগে যে কোন কাজ-কর্ম করতে রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি রাজনৈতিক চাপে একটু দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকতে হত। এখন এক বাক্যে সবার সহযোগিতায় কাজ কর্ম করে যাচ্ছি। আর পুলিশের প্রধান কাজ হল মানুষের সেবা করা।

 

 
Electronic Paper