ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নীলফামারীতে চাল কিনতে দীর্ঘ লাইন

করোনা সক্রমণের শঙ্কা

নীলফামারী প্রতিনিধি
🕐 ১২:০৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০৬, ২০২০

করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কর্মহীন ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য নীলফামারী জেলা শহরের খোলা বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে ১০ টাকা কেজি দরের চাল ও ১৮ টাকা কেজি দরের আটা বিক্রি। পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে এ কার্যক্রম শুরু করেছে জেলা খাদ্য বিভাগ। তবে এটি নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সুখবর হলেও সামাজিক দূরত্ব না মানায় ঝুঁকি রয়েছে করোনা সংক্রমণের।

গত রোববার পৌরসভার পাঁচটি স্থানে একযোগে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী। বিক্রয় কার্যক্রম শুরুর পর শহরের পাঁচটি স্থান ঘুরে দেখা গেছে, এসব স্থানে ক্রেতার দীর্ঘ লাইন। নারী ও পুরুষের আলাদা লাইন হলেও প্রতিটি লাইনে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আছেন সবাই। তবে চাল এবং আটা পেয়ে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে মানুষের মধ্যে।

শহরের টুপির মোড় এলাকায় চাল ও আটা বিক্রি করছিলেন খাদ্য বিভাগের ওএমএস পরিবেশক হাচান আলী। সেখানে শতাধিক নারী ও পুরুষকে আলাদা করে গাদাগাদি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দাঁড়ানো বেশিরভাগ মানুষের মুখে নেই মাস্ক। সেখানে চাল নিতে এসেছেন মর্জিনা বেগম। তিনি বলেন, ‘মানষির বাড়িত কাজ-কাম করি খাই। এলা কাহো কামোত নেছে না। সংসারোত খুব অভাব চলেছে। ৩ কেজি আটা কিনিবার জন্য টাকা হওলাদ করি আসিনু এইঠে।’ লাইনে গাদাগাদি করে দাঁড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সবাইতো দূরে দূরে থাকিবার কছে। এইঠে আসি সেইলা কাহোয় মানেছে না।’

পরিবেশক হাচান আলী বলেন, ‘সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পুলিশ প্রশাসন এবং আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। মানুষ বুঝতে চায় না। পরবর্তী দিনে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হবে।’

একই অবস্থা দেখা গেছে শহরের বড় বাজার ট্রাফিক মোড়ে। সেখানে চাল ও আটা বিক্রি করছিলেন খাদ্য বিভাগের পরিবেশক বিনোদ মহেশ্বরী। চাল নিতে এসছিলেন বাড়াইপাড়া গ্রামের রিকশাচালক আব্দুল রহমান (৪৫)। তিনি বলেন, ‘ঘরে বন্দি। কামাই নাই। খাবার অভাব চলেছে। ৫০ টাকায় পাঁচ কেজি চালে মোর দুই দিন চলিবে।’ তার মুখেও ছিল না মাস্ক। লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন গাদাগাদি করে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি বিবেচনায় নেই তাদের।

এ বিষয়ে ওই ডিলারের প্রতিনিধি রমজান আলী বলেন, ‘মানুষ এসে লাইনে দাঁড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। লাইনে দাঁড়ানোর দূরত্ব বার বার ফাঁকা করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মানছে না কেউ।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন অভি বলেন, প্রাথমিকভাবে নীলফামারী পৌরসভা এলাকায় এ কার্যক্রম শুরু হলেও আজ থেকে ডোমার, জলঢাকা ও সৈয়দপুর পৌরসভায় এ কার্যক্রম শুরু করা হবে। এ কার্যক্রমে বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল থাকবে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে আমরা দূরত্বের চি‎হ্ন করে দিয়েছি। আইনসৃংখলা বাহিনীর সদস্যরাও কাজ করছেন।

তবে সরেজমিনে গিয়ে ওই দুই স্থানে লাইনে দাঁড়ানোর সামাজিক দূরত্ব চি‎হ্নের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

 
Electronic Paper