ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ওমরাতো মুখ দেখি অনুদান দেওচে

তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
🕐 ১২:২১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০২, ২০২০

রংপুরের তারাগঞ্জে করোনা মোকাবেলায় সরকারি নিয়ম মানছেন না কেউই। সচেতনতা তো দূরের কথা উল্টো মরণঘাতী এই ভাইরাস নিয়ে নানা ধরনের হাসি-ঠাট্টাও হেয়ালিপনা করছেন গ্রামের সহজ সরল সাধারণ মানুষ। করোনা মোকাবেলায় সরকারি নিয়মানুসারে সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জীবন যুদ্ধে সেই নির্দেশনা মানছেন না খেটে খাওয়া দিন মজুর ও নিম্নআয়ের সাধারণ মানুষ।

দিন শেষে যাদের দুই হতে তিন’শ টাকা দিয়ে চলে সংসারের চাকা। সেই সাধারণ মানুষ সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই দল বেধে সারি বদ্ধ হয়ে ভীড় জমিয়েছেন জীবিকার তাগিদে উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজর ও মাঠের কাজে। করোনা প্রতিরোধের নিয়ম ও নির্দেশনা মানছেন না তারাগঞ্জ, ইকরচালী, বুড়িরহাট, হাজির হাট, মাঝের হাট,বালাবাড়ির হাট, কাজির হাট, চিলাপাক, ডাঙ্গিরহাট, চিকলী বাজার সহ গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় মহল্লার দোকানগুলোতে। তাদের কাছে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, একদিন কাজ কাম না করলে ভাত কায় দিবে, বাঁচমো না মরমো তা আল্লাহয় ভালো জানে।

এমন পরিস্থিতি গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার ইকরচালী ইউনিয়নের মাঝাপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, স্যার হামার খোঁজ খবর কায় নেয়। এক সপ্তাহ হইল খেয়া না খেয়া আছি কোন কথা কইল না কায়ো, কি খাইছেন নাই খান বাহে।

সয়ার বারাপুর গ্রামের কৃষক মনির মিয়া বলেন, কাজ না করলে মোর সংসার চলাইবে কায় সরকার নাকি মেম্বার চেয়ারম্যান। দুই সপ্তাহ হইল কায়ো কোন দিন জিজ্ঞেস করিল না বাহে কি খাইসেন। মুখোত বড় কথা সবায় কয়,আরে ওমরাতো মুখ দেখি দেখি অনুদান দেওচে।

হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের মন্দিপাড়া গ্রামের সন্তোষ কুমার রায় বলেন, দাদা সরকার তো মেলা অনুদান দেছে শুনছো টিভিত। এখন কি খাই। বাড়ি থাকি বেড়ারও পাওছি না, কেমন করি সংসার চালাই। হামার পেট তো কথা শুনে না।

কুর্শা ইউনিয়নের থানাপাড়া গ্রামের সাদেকুল ইসলাম বলেন, বাবা মুইতো গাড়ির কাম করি জীবন চালাও। করোনা মরোনার জন্যে কাম বন্ধ, এখন কেমন করি জীবন বাঁচাও মুই।

কুর্শা ইউপি চেয়ারম্যান আফজালুল হক সরকার বলেন, আমি সবার খোঁজ খবর রাখার চেষ্টা করছি। গ্রামে গিয়ে হতদরিদ্রদের তালিকা করেছি। পর্যাক্রমে তাদের মধ্যে চাল, ডাল ও আলু দেওয়া হবে।

পিআইও আব্দুল মমিন বলেন, দেশের এই করোনা বাইরাস মোকাবেলায় সরকারি ভাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় মোট এক হাজার পরিবারের মাঝে চাল, ডাল ও আলু বিতরণ করা হবে।

ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, সংকটময় কেটে উঠতে সময় লাগবে, এটি সোয়াছে বা সংক্রমণ জাতীয় ভাইরাস। সবাইকে নিয়ম মানতে হবে সরকারি। ইতিমধ্যে কিছু দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সতর্ক করেছি হাট-বাজারসহ গ্রাম গঞ্জে।

গত বুধবার তারাগঞ্জে বগুড়া হোটেলে নিয়ম বহির্র্র্ভূত করায় ভ্রাম্যমান আদালতে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। নিম্নআয়ের মানুষের বরাদ্দকৃত সরকারি অনুদান বিতরণে অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 
Electronic Paper