বিপাকে শ্রমজীবীরা
নীলফামারী প্রতিনিধি
🕐 ১২:৫৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০১, ২০২০
নীলফামারী শহরে রিকশা চালান আবু বক্কর ছিদ্দিক (৫০)। ছয় সদস্যের পরিবার চালাতে তার প্রতিদিন প্রয়োজন ৫০০ টাকা। বর্তমান করোনা ঝুঁকির মধ্যে আয় করতে পারছেন ৮০ থেকে ১০০ টাকা। সে আয়ে চলছে না তার সংসার। ঘটতি মেটাতে প্রতিদিন তার বাড়ছে দেনা।
আবু বক্কর ছিদ্দিক জানান, স্বাভাবিক পরিস্থিতে তার আয়ে সংসার খরচ মিটে যেত। এখন ঘাটতি মেটাতে দেনার পরিমাণ বাড়ছে। সাহায্য সহযোগিতার জন্য কারও কাছে গেলে বিশ্বাস করতে চায় না।
এ কয়েক দিনে সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা প্রদানের বিষয়টি চোখে পড়েছে তার। কিন্তু অভাবের মধ্যে থাকলেও লজ্জায় হননি কারও দ্বারস্থ। তিনি এমন পরিস্থিতির শিকার হননি কখনও। কিন্তু এবার মানুষ ঘর থেকে বাইরে না আসায় পড়েছেন বিপদে।
শহরের মড়াল সংঘ মোড়ে রিকসাস্টান্ডে কথা হয় তার সঙ্গে। এ সময় অসহায়ত্ব প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘শহরে অনেকে চাল-ডাল বিতরণ করছেন। কিন্তু অভাব থাকলেও লজ্জায় কারও কাছে যেতে পারছি না।’
একই অবস্থা জেলা শহরের সরকারপাড়া গ্রামের রিকশাচালক আব্দুস সালামের (৪৫)। তিনি বলেন, ‘পাঁচদিন বাড়িত আছিনু। জমা ১০০০ টাকা আর হাওলাদি ৫০০ টাকা শ্যাষ। এলা রিকশা নিয়া বেড়ে আসিলেও প্যাসেঞ্জার নাই। ইলিফের চাইলেও হামার অভাবোক বিশ্বাস করে না।’
শুধু ছিদ্দিক আর সালামই নয়, বেকার হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ। এসব মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা অভাব। সরকারি খাদ্য সহায়তা, বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে সহায়তা প্রদান করা হলেও সেটি অপর্যাপ্ত। এসব মানুষের দাবি পর্যাপ্ত সহযোগিতার।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এস এ হায়াত জানান, প্রয়োজন ভিত্তিক খাদ্য সহায়তায় জেলায় বরাদ্দ পাওয়া গেছে ২০০ টন চাল ও নয় লাখ টাকা। এরই মধ্যে জেলার ছয় উপজেলা ও চার পৌরসভায় বরাদ্দ দেওয়ার পর মজুদ হয়েছে ১৫৪ টন চাল ও তিন লাখ টাকা।