তিস্তায় বালু উত্তলোনের প্রতিযোগিতা, ঝুঁকিতে তিন গ্রাম
জাহিদুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম
🕐 ১১:০৯ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ৩১, ২০২০
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার তিস্তা নদীতে ছয়টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের প্রতিযোগতায় নেমেছে প্রভাশালীরা। এতে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে তিস্তাপাড়ের তিনটি গ্রাম। প্রায় দুই মাস বন্ধ থাকার পর ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু হলেও স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দুই মাস আগে রাজারহাট উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা মোহা. যোবায়ের হোসেন ৮-১০টি ড্রেজার ও সরঞ্জাম পুড়িয়ে দেন। এরপর থেকে উপজেলার সাত ইউনিয়নের ২৫টি ড্রেজার বন্ধ পড়ে রয়েছে। এছাড়া বৈধ পন্থায় বালু উত্তোলনের লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস থেকে উপজেলার নয়টি স্থানে বালুমহাল স্থাপনের অনুমতির লক্ষ্যে একটি প্রস্তাবনা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
সে সময় ড্রেজারগুলো বন্ধ হওয়ার পর স্থানীয় একটি দালাল চক্র ব্যবসা পুনরায় চালাতে প্রশাসনের একজন কর্মকর্তাকে ম্যানেজের কথা বলে একাধিক ড্রেজার মালিকের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবির গুঞ্জন উঠে। কিন্তু ড্রেজার মালিকরা অনৈতিক দাবি পূরণে রাজি হননি।
এদিকে গত এক সপ্তাহ থেকে হঠাৎ করেই উপজেলার ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের সরিষাবাড়ি নামক স্থানে তিস্তা নদীতে স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের প্রত্যক্ষ মদদে পার্শ্ববর্তী কাউনিয়া উপজেলার বাহাদুর আলী, শাহআলী ও খোকা মিয়ার ছয়টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন শুরু হয়। বালু উত্তোলনের ফলে উপজেলার ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের সরিষাবাড়ি, বগুড়াপাড়া ও ডাবুর বাজার নামক তিনটি ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ড্রেজার মালিক বলেন, দালালদের দাবিকৃত অর্থ ও মাসোহারা দিতে পারিনি বলে আমরা বালু উত্তোলন করতে না পেরে বসে আছি।
উপজেলার রাজারহাট সদরের হরিশ^র তালুক গ্রামের ড্রেজার মালিক ফুলচাঁদ বলেন, এর আগে আমার ভাতিজা নূরনবী ও বাবলুর তিনটি ড্রেজারের সরঞ্জাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে বাবলুর ড্রেজার মেশিনটি দিয়ে কোনো বালু উত্তোলন না করা সত্বেও সেটি পোড়ানো হয়েছিল। আমরা আইনকে শ্রদ্ধা করে সব মেশিনগুলো বন্ধ রেখেছি। অথচ এখন বহিরাগত ড্রেজার দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন চলছে।
ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের সরিষাবাড়ির ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান, আমি জনপ্রতিনিধি। স্থানীয় লোকজন বালুর অভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণকাজ করতে পারছে না। তাই একটু সহযোগিতা করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহা. যোবায়ের হোসেন জানান, ব্যস্ততার কারণে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারিনি। ব্যস্ততা কমলে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।