ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

উত্তরা ইপিজেডে ঝুঁকিতে ৩৫ হাজার শ্রমিক

নীলফামারী প্রতিনিধি 
🕐 ৩:৫১ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩০, ২০২০

মারণঘাতক করোনা বিস্তাররোধে সারাদেশব্যাপী চলছে ১০ দিনের অঘোষিত লকডাউন। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল ধরণের স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, কারখানা বন্ধ রয়েছে। যদিও পোশাক কারখানা সরকারের নির্দেশনার পরও দুদিন চলেছিল। পরে তাও বন্ধ ঘোষণা করে বিকেএমইএ। পাশাপাশি বিজিএমইএও বন্ধ রাখার সুপারিশ করে। কিন্তু সরকার নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে খোলা রাখা হয়েছে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের কারখানাগুলো।

মারণঘাতক করোনা বিস্তাররোধে সারাদেশব্যাপী চলছে ১০ দিনের অঘোষিত লকডাউন। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল ধরণের স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, কারখানা বন্ধ রয়েছে। যদিও পোশাক কারখানা সরকারের নির্দেশনার পরও দুদিন চলেছিল। পরে তাও বন্ধ ঘোষণা করে বিকেএমইএ। পাশাপাশি বিজিএমইএও বন্ধ রাখার সুপারিশ করে। কিন্তু সরকার নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে খোলা রাখা হয়েছে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের কারখানাগুলো।

যেখানে কাজ করেন জেলার ৩৫ হাজার নারী-পুরুষ। তাই উত্তরা ইপিজেড লকডাউনের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে নীলফামারীবাসী। জরুরিভিত্তিতে ইপিজেডের অভ্যন্তরে থাকা কলকারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণার জন্য জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন শতশত মানুষ। তারা লিখেছেন, গোটা নীলফামারী জেলা ২৬ মার্চ হতে লকডাউন। মানুষজন ঘরবন্দি। কিন্তু খোলা
রাখা হয়েছে সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়নে অবস্থিত বেপজার উত্তরা ইপিজেড।

সেখানে কাজ করছে এ জেলার প্রায় ৩৫ হাজার নারী-পুরুষ। তাদের প্রতিদিন সকাল ৭টায় যেতে হয় ইপিজেডে ও বাড়ি ফিরতে হয় সন্ধ্যায়। নীলফামারীবাসী করোনা ভাইরাসে ঘরবন্দি হলেও এই শ্রমিকরা গৃহবন্দি হয়নি। একদিন কাজে না গেলে তাদের চাকরি থাকবে না। তারা বাধ্য হয়ে চাকরি হারানোর ভয়ে ঝুঁকি নিয়ে কাজে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

মো. নাঈম শাহারিয়া পিউ তার ফেসবুকে লিখেছেন, অতিসত্ত্বর উত্তরা ইপিজেড বন্ধ ঘোষণা করুন। কেন, না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত উত্তরা ইপিজেডে চায়নাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত কোম্পানিগুলোকে প্রোডাকশন চালিয়ে যাওয়ার জন্য এ জরুরি ছুটি ঘোষণা করেন নাই।

উত্তরা ইপিজেডে কয়েকটি ফ্যাক্টরি ইতোমধ্যে বন্ধ ঘোষণা করেছে। এরমধ্যে ভেলাটেক্স, দেশবন্ধু, সেকশন সেভেন, উত্তরা সোয়েটার্স অন্যতম। এখন যেসব ফ্যাক্টরি চালু রয়েছে, তারমধ্যে ভেঞ্চুরা লেদারওয়ার, মাজেন বিডি, সনিক বিডি, এভারগ্রীন। এসব কোম্পানি এখনও দিব্বি খোলা এবং অধিকাংশ কোম্পানিই চায়নিজ কর্তৃক পরিচালিত। পিউ লিখেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেখানে ৫০০০ কোটি টাকার প্রণোদনাও ঘোষণা করেছেন।

সেখানে কীভাবে, রাষ্ট্রীয় নির্দেশনাকে এভাবে অগ্রাহ্য করে উত্তরা ইপিজেডের দুচারটে কোম্পানি। এভাবে লকডাউন ভেঙে যদি প্রতিদিন প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ কাজে যাওয়া আসা করতে থাকে আর চায়নিজদের তত্ত্বাবধানে থেকে যদি কেউ সংক্রমিত হয় করোনাভাইরাসে বা যেকোনো অন্য উপায়ে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পরলে এজন্য কে দায়ী থাকবে!

নারী নেত্রী আরিফা সুলতানা লাভলী লিখেছেন, উত্তরা ইপিজেড লকডাউন করা জরুরি। উত্তরা ইপিজেডে বিশে^র বিভিন্ন দেশের ৩১টি ফ্যাক্টরির মধ্যে ২২ চালু রয়েছে। শ্রমিকদের পাশাপাশি ইপিজেড এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারাও চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। এই ইপিজেডে চীনা নাগরিক থাকায় আমরা বেশি আতঙ্কিত।

ইপিজেডের মূল গেটের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ইপিজেড কেন্দ্রীক গড়ে ওঠা বাজারের দোকানগুলো বন্ধ থাকলেও পূর্বের মতোই নারী-পুরুষ শ্রমিকরা সাইকেল, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা করে দলবেঁধে আসছেন। ইপিজেডে প্রবেশ করছেন একে অপরের গায়ে ঘেঁষে। নূন্যতম দূরত্বও বজায় রাখছেন না শ্রমিকরা।

নীলফামারীর সিভিল সার্জন ডা. রণজিৎ কুমার বর্মন বলেন, উত্তরা ইপিজেড নিয়ে একটু বেশিই চিন্তিত। কারণ ওখানে যারা বিদেশ থেকে আসে তারা হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলে না। আমার সঙ্গে যোগাযোগও করে না। বিশেষত চীনের নাগরিকদের তথ্য চেয়ে বিভিন্ন সময়ে আমি এবং আমার স্টাফদের মাধ্যমে তাদের তথ্য নেয়ার চেষ্টা করেছি।

তারা আমার সঙ্গে কো-অপারেট করেনি। এখন তাদের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ হয় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে।

জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, বিষয়টি আমরা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে অবগত করেছি। নির্দেশনা মাফিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 
Electronic Paper