ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কুড়িগ্রামে বাড়ছে বাল্যবিয়ে

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
🕐 ১২:৩০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৩০, ২০১৯

সপ্তম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় পারিবারিক সিদ্ধান্তে বিয়ে হয় কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ব্রহ্মত্তর গ্রামের হাজেরা বেগমের। বিয়ের দুই বছরের মাথায় যমজ সন্তানের জন্ম দেয় সে। হাজেরার বয়স এখন ১৬, আর তার যমজ মেয়েদের বয়স ২২ মাস।

১২ বছর বয়সে বিয়ে হয় লিপির। ১৫ বছরের লিপির কোলে এখন ২২ মাসের শিশু সন্তান। শিশু বয়সেই মা হয়েছে ওই গ্রামের আঁখি, শাহীনা আক্তারসহ অনেক শিশু-কিশোরী, যাদের সবার বয়স আঠারোর নিচে। সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধুলা আর স্কুলে গিয়ে পড়ালেখার বয়সে শুধু সংসারের ঘানিই নয় তারা এখন সন্তানের মা হয়ে মাতৃত্বের ভারও বহন করছে। এমন চিত্র কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নসহ প্রায় পুরো জেলায়। বাল্যবিয়ে এখানে যেন স্বাভাবিক নিয়ম!

যদিও প্রশাসনের দাবি, অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন ও বয়স যাচাই করে বিয়ে রেজিস্ট্রি করার বাধ্যবাধকতা থাকায় এ জেলায় বাল্যবিয়ের হার অনেকাংশে কমে আসছে। আর সমাজকর্মীদের তথ্য মতে, ওই ইউনিয়নে এখনও প্রায় ৪৫-৫০ ভাগ শিশু বাল্যবিয়ের শিকার হয়ে থাকে।

বাল্যবিয়ে নিয়ে কাজ করেন এনজিও কর্মী আতিকুর রহমান। তিনি জানান, সামাজিক নিরাপত্তার অভাব এবং দারিদ্র্যের কারণে এই ইউনিয়নে এখনও অহরহ বাল্য বিয়ে হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে সচেতন মানুষের উপস্থিতিতে এসব বিয়ে হলেও বেশির ভাগ হচ্ছে গোপনে।

অনলাইনে বয়স যাচাইসহ বিবাহ নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও কীভাবে বাল্যবিয়ে হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কাজিদের কাছে নিবন্ধন বইয়ের বিকল্প বই থাকে। তারা বয়স উল্লেখ না করে বর ও কনের যাবতীয় তথ্য সেখানে লিপিবদ্ধ করেন। পরে বর ও কনের নির্ধারিত বয়স পূর্ণ হলে কাজিরা এসব তথ্য মূল ভলিয়মে নিবন্ধন করেন। আর বিয়ের বৈধতা দেওয়ার জন্য কাজিরাই শরিয়া আইন অনুযায়ী ধর্মীয় রীতিতে বিবাহ সম্পন্ন করান।’

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, বাল্যবিয়ে এবং অপরিণত বয়সে মা হওয়ার খবর আমরা প্রায়ই পাচ্ছি। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিসহ প্রশাসনিক সব প্রচেষ্টা আমরা অব্যাহত রেখেছি।

 
Electronic Paper