ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

প্রতিবন্ধী আয়েশার পথচলা

নুর হোসেন রেইন, সাঘাটা (গাইবান্ধা)
🕐 ৯:০০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৯

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পূর্ব কচুয়ায় এক গরিব পরিবারে ১৯৯৩ সালে দুই হাতবিহীন প্রতিবন্ধী অবস্থায় জন্ম নেয় আয়েশা আক্তার। প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম গ্রহণ করার পর তার পরিবারে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। নানা প্রতিকূলতার মাঝে তাকে বড় হতে হয়। জন্ম থেকেই আয়েশার দুটি হাত নেই। বাবা, মা ও পরিবারের সবাই আয়েশার ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান। মেয়ে হয়ে জন্ম নিয়ে তার ওপর দুটি হাত নেই।

পরিবারের সবার সাহায্য নিয়ে চলতে হতো আয়েশাকে। কিন্তু আয়েশা সব সময় ভাবতো কী করে অন্যের সাহায্য ছাড়া একা চলা যায়, হাত নেইতো কি হয়েছে। দু’পা তো আছে। পা দিয়ে হাতের কাজগুলো করা যায় কি না। যেই ভাবা সেই কাজ। আয়েশা হাতের কাজগুলো আস্তে আস্তে পা দিয়ে করার চেষ্টা করতে লাগলো। ছোট বেলা থেকেই তার পড়ালেখার স্বপ্ন ছিল। কিন্ত পড়ালেখা করতে সবচেয়ে বড় বাধা হলো তার হাত নেই। সে এই বাঁধা অতিক্রম করেই পা দিয়েই লেখাপড়া শুরু করে। বহু চেষ্টা আর পরিশ্রমের পর আয়েশা পা দিয়ে হাতের সব কাজ করতে পারল। এখন পা দিয়ে স্বাভাবিক মানুষের সব কাজ করতে পারে। 

সে এখন পা দিয়ে কাঁথা সেলাই করে, ল্যাপটব চালায়, মোবাইলে কথা বলেন, দরজায় লাগানো তালা চাবি দিয়ে খোলে। রান্না করে আর লেখার কাজটা পা দিয়েই ভালোভাবে করতে পারে। সে যখন ৫ম শ্রেণিতে ওঠে তখন তার বাবা আব্দুল লতিফ তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য অস্থির হয়ে ওঠেন। কিন্ত আয়েশার বিয়ে করার ইচ্ছে ছিলনা। সে সহনীয় নারী প্রগতি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কাছে গিয়ে সব খুলে বলেন। সুলতানা আয়েশার বাবা-মাকে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে বলার পর বিয়ে বন্ধ করে দেন। আয়েশাকে তারা আবার নিয়মিত পড়ালেখা করতে দেন। ইতোপূর্বে সপ্তাহে একদিন কম্পিউটার শিখেছেন তথ্য কল্যাণীর কাছে। সে কয়েক প্রকারের সেলাই ও কম্পিউটারের এমএসওয়ার্ড মোটামুটিভাবে শেষ করেছে।

 
Electronic Paper