ধুঁকছে পীরগঞ্জ স্বাস্থ্যকেন্দ্র
ঠাকুরগাঁও ও পীরগঞ্জ প্রতিনিধি
🕐 ৪:০৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৫, ২০১৯
নানামুখী সংকটে জর্জরিত ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। ৫১ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ উপজেলার সাড়ে তিন লক্ষাধিক মানুষ। পরীক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি সংকট তো আছেই। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সমস্যার সমাধান চেয়ে হাসপাতাল থেকে বারবার আবেদন করলেও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ৩১ শয্যার এ হাসপাতালটিকে ৫১ শয্যায় উন্নীত করা হলেও সংযোজন করা হয়নি প্রয়োজনীয় জনবল। একটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক ও সহকারী সার্জনের পদ রয়েছে ২১টি। এর মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র পাঁচজন।
অ্যানেসথেসিয়া প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন ডাক্তার দিয়ে গাইনি বিভাগের অপারেশন চালু রাখা গেলেও অ্যানেসথেসিস্টকে অন্যত্র বদলি করায় প্রায় ১৯ মাস ধরে এ হাসপাতালে বন্ধ রয়েছে অপারেশন। ফলে গর্ভবতী মায়েদের বিভিন্ন ক্লিনিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে সীমাহীন সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।
সিজারিয়ান কার্যক্রম বন্ধ থাকার ফলে দিনের পর দিন অব্যবহৃত থাকায় নষ্ট হতে বসেছে মূল্যবান যন্ত্রপাতি। ডেন্টাল বিভাগে চিকিৎসক থাকলেও ডেন্টাল চেয়ারটি ২০০৭ সালে অকেজো ঘোষিত হওয়ায় এ বিভাগের কার্যক্রম ১২ বছর ধরে বন্ধ প্রায়।
এদিকে মেডিসিন, সার্জারি, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, অ্যানেসথেসিয়া, ইউনানী ও শিশু বিভাগেও নেই কোনো চিকিৎক। দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে হাসপাতালের স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের পদটিও। এ পদের ব্যক্তি সুবিধামতো নিজের এলাকায় ডেপুটেশনে রয়েছেন বছরের পর বছর ধরে। স্টোর কিপারের পদটিও শূন্য দীর্ঘদিন ধরে। স্যানিটেশন এবং স্টোরের দায়িত্ব নিজের কাজের পাশাপাশি পালন করছেন স্বাস্থ্য সহকারী।
এ বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্সরাও নিজেদের সুবিধামতো ঠাকুরগাঁয়ে ডেপুটেশনে রয়েছেন। ফার্মাসিস্টের চারটি পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র দুজন। হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি ২০০৯ সালে অকেজো ঘোষিত হলেও এ পর্যন্ত নতুন মেশিন সরবরাহ করা হয়নি।
উপজেলার নারায়ণপুর ও ভেলাতৈর থেকে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন রোগীর স্বজনরা বলেন, আমরা সিজারের রোগী এনে বোকা হয়ে গিয়েছি। রোগীকে নিয়ে কোথায় যাব বুঝতে পারছি না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আখতারুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে সর্বশেষ সভায়ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে এবং রেজুলেশনের কপি সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে।
আশা করছি শিগগিরই সব সমস্যা সমাধানে ইতিবাচক সাড়া মিলবে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার শেখ জুবায়ের বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষকে অনেকবার বিষয়গুলো লিখিতভাবে জানিয়েছি। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি এখানকার সব সমস্যার সমাধান হবে।