ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রমেকে ডায়ালাইসিস বন্ধ, নীরব কর্তৃপক্ষ

সাইফুল ইসলাম, রংপুর
🕐 ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৭, ২০১৯

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের কিডনি বিভাগের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নষ্ট হওয়ায় ডায়ালাইসিস কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকা পালন করছে। অবস্থা এমন যে, দ্রুত ডায়ালাইসিস শুরু না হলে মুমূর্ষু রোগীরা বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন।

জানা যায়, হাসপাতালে সার্বক্ষণিক ডায়ালাইসিস কার্যক্রম চালু রাখতে দুটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট রয়েছে। কিন্তু প্রথমটি চার মাস আগে নষ্ট হয়ে যায়, যা আজও ভালো করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিশ^স্ত সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে উপকরণ সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিনের বকেয়া না পাওয়ায় পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হচ্ছে। রমেক হাসপাতালে ২৪টি ডায়ালাইসিস মেশিনের মধ্যে সচল রয়েছে ১৮টি। বর্তমানে প্যাকেজসহ নতুন মিলে প্রতিদিন দুই শিফটে ৫০ থেকে ৮০ জন রোগীর ডায়ালাইসিস করা হয়।

এদিকে ডায়ালাইসিস কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে কিডনি রোগীরা গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিচালকের রুমে ঢুকতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দেন। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে রোগীদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এতে নয়ন (৩৭) নামে এক কিডনি রোগী গুরুতর আহত হলে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জানা গেছে, লেকজিকোন নামক প্রতিষ্ঠানটি কেমিক্যাল গ্রুপে বিভিন্ন উপকরণ সরবরাহ করে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি দুই বছরে এ গ্রুপে সরবরাহকৃত কেমিক্যালের জন্য বরাদ্দকৃত কয়েক কোটি টাকা আজও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিশোধ করেনি। এতে এ বিভাগে অচলাবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।

লেকজিকোন লিমিটেডের অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত কেমিক্যাল গ্রুপে বিভিন্ন উপকরণ সরবরাহ করা হচ্ছে। অথচ ফান্ডে টাকা থাকা সত্ত্বেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো টাকা পরিশোধ করেনি। বিষয়টি একাধিকবার বর্তমান পরিচালককে বলেও এর সুরাহা হচ্ছে না।

প্রতিষ্ঠানের একজন প্রতিনিধি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ৩০ জুনের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে সরকারি টাকা ফেরত যাবে। পাশাপাশি মারাত্মক সমস্যায় পড়বে তাদের প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে লেকজিকোনের ম্যানেজার প্রকৌশলী শাকিল চৌধুরী বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠান ওয়াটার প্লান্টটি সরবরাহ করলেও ভালো করার দায়িত্ব তাদের নয়। তবে তারা মানবিক কারণে এর আগে নষ্ট মেশিন সার্ভিসিং করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, যে কোনো নষ্ট মেশিন সার্ভিসিং করতে তারা প্রস্তুত। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ওয়ার্ক অর্ডার চাইলে তারা তা দেন না।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আবদুল গণি খোলা কাগজকে বলেন, প্লান্টগুলো সরবরাহ করেছে লেকজিকোন নামে একটি কোম্পানি। তাই নষ্ট মেশিন ভালো করার জন্য ওই প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটির দুই বছরের বকেয়া পাওনা সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিচালক বলেন, গত ২ বছর থেকে বকেয়া থাকার পরও তারা কাজ করছে। তিনি যোগদানের পর প্রতিষ্ঠানটিকে কয়েক মাস চালিয়ে নেওয়ার কথা বলা হলেও তারা শুনছে না।

কিডনি রোগী আহত হওয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশকিছু লোক একযোগে আমার রুমে ঢুকতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দেয়। এতে কেউ আহত হতে পারেন।

 
Electronic Paper