ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিদ্যুতের লো ভোল্টেজ দীর্ঘদিন বন্ধ চা ফ্যাক্টরি

হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
🕐 ৭:৩৩ অপরাহ্ণ, জুন ০১, ২০১৯

বিদ্যুতের লো ভোল্টেজের কারণে বন্ধ হওয়া লালমনিরহাট জেলার একমাত্র চা ফ্যাক্টরি ‘সোমা অ্যান্ড সোমা টি প্রসেসিং লিমিটেড’ যেন গলার ফাঁস হয়ে ঝুলছে উদ্যোগতা দম্পতির। উৎপাদন বন্ধ রয়েছে প্রায় আড়াই বছর ধরে। এতে ব্যাংকসহ অন্যান্য ঋণের ভারে দিশেহারা হয়ে পড়েছে এ জেলার সমতল জমিতে চা চাষের প্রবর্তক নারী উদ্যোগতা সাহানারা বেগম সোমা ও ফেরদৌস আলম দম্পতি। তাই ফ্যাক্টরিসহ এ অঞ্চলে চা শিল্প রক্ষায় শেষ ভরসাস্থল প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পেতে বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ওই দম্পতি।

জানা গেছে, ২০০৭ সালে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বিছনদই গ্রামের সাহানারা বেগম সোমা ও ফেরদৌস আলম দম্পতি উত্তরের সীমান্তবর্তী কৃষি নির্ভরশীল এ অঞ্চলে প্রথম চা চাষ শুরু করেন। নাম দেন ‘সোমা টি স্টেট’। প্রথম দিকে এক একর জমিতে শুরু করলেও পরবর্তীতে তাদের চা-বাগান দাঁড়ায় ৯ একরে। ‘সোমা টি স্টেট’র সফলতা দেখে ধীরে ধীরে চা চাষ ছড়িয়ে যায় এ সমতল অঞ্চলে।

কৃষকদের চা চাষে আরও উৎসাহিত করতে, চা গাছের সবুজ পাতা বিক্রির নিশ্চয়তা ও কৃষকদের ন্যায্যমূল্য পাইয়ে দিতে ওই দম্পতি ২০১৬ সালে তাদের সর্বস্ব বিনিয়োগ করে প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চা-বাগানের পাশেই গড়ে তোলেন সোমা অ্যান্ড সোমা টি প্রসেসিং লিমিটেড নামে একটি চা ফ্যাক্টরি। শুরুতে ভালোই চলছিল ফ্যাক্টরিটি। স্থানীয় চা চাষিরাও খুশি ছিলেন ন্যায্যমূল্যে চায়ের সবুজ পাতা বিক্রি করে। কিন্তু চালুর মাত্র দুই মাস পরেই আকস্মিকভাবে বিদ্যুতের লো ভোল্টেজ জটিলতায় বন্ধ হয়ে যায় ফ্যাক্টরিটি।

এদিকে কারখানা তৈরির সময় এক কোটি ৯৫ লাখ টাকা ঋণ আসে ডিবিবিএল ব্যাংক থেকে। ব্যাংকের ঋণ বাড়ছে সুদে সুদে আর চাপও আসছে ঋণ পরিশোধের। কারখানাটি চালু রাখতে না পারায় নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রপাতি।

সীমান্তবর্তী এ অঞ্চলে চা চাষ বৃদ্ধিসহ চাষিদের উৎপাদিত সবুজ পাতার ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিতে জরুরি ভিত্তিতে জেলার একমাত্র চা ফ্যাক্টরিটি পুনরুজ্জীবিত করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন চা চাষি বদিউজ্জামান ভেলুসহ স্থানীয় চা চাষিরা।

চা চাষের প্রবর্তক সাহানারা বেগম সোমা জানান, এ অঞ্চলে ‘সোমা টি স্টেট’ নামে তিনিই প্রথম চা চাষ শুরু করেন। পরবর্তীতে এ অঞ্চলের কৃষকদের চা চাষে আরও উৎসাহিত করতে তার বাগানের পাশেই ‘সামা অ্যান্ড সোমা টি প্রসেসিং লিমিটেড’ নামে একটি চা ফ্যাক্টরি গড়ে তোলেন। কিন্তু বিদ্যুতের লো ভোল্টেজের কারণে বন্ধ হওয়া চা ফ্যাক্টরিটি তাদের গলার ফাঁস হয়ে ঝুলবে তা তিনি ভাবেনি কখনো।

এ কথা বলেই কেঁদে ওঠেন সাহানারা বেগম। তিনি আরও জানান, এ অঞ্চলে চা শিল্প রক্ষায় শেষ ভরসাস্থল প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পেতে এখন তারা বিভিন্নজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

 
Electronic Paper