ঠাকুরগাঁওয়ে এক মাসেও শুরু হয়নি গম সংগ্রহ
হাসান বাপ্পি, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
🕐 ৪:৩৯ অপরাহ্ণ, মে ১১, ২০১৯
সরকারি নির্দেশনার এক মাস অতিবাহিত হলেও ঠাকুরগাঁওয়ে গম সংগ্রহের কাজ শুরু হয়নি। ফলে এবারের ক্রয় কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হতে পারেন কৃষক।
ঠাকুরগাঁও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে জেলার পাঁচটি উপজলোয় সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ছয় হাজার ৬০৯ টন গম ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, ঠাকুরগাঁওসহ সারা দেশে গত ১ এপ্রিল থেকে শুরু করে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত সরাসরি কৃষকের কাছে গম কেনার কথা থাকলেও ঠাকুরগাঁওয়ে এখনো শুরু হয়নি।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. বাবুল হোসেন জানান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কর্তৃক সংশ্লিষ্ট উপজেলা খাদ্যশস্য কমিটির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তালিকাভুক্ত কৃষকদের কাছ থেকেই গম ক্রয়ের সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। প্রত্যেক কৃষকের কাছ থেকে সর্বনিম্ন দেড়শ কেজি থেকে সর্বোচ্চ তিন টন গম ক্রয় করা হবে। তালিকা না পাওয়ায় গম সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু করা হয়নি।
তবে জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, কৃষি বিভাগের তালিকা পাওয়ার পর লটারি হবে এবং গম সংগ্রহ শুরু হবে। শুরুটা দেরিতে হলেও নির্দিষ্ট সময়ে গম সংগ্রহ অভিযান সম্পন্ন হবে।
এ দিকে গম সংগ্রহ সরকার ঘোষিত সময়ের মধ্যে শুরু না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন চাষিরা। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউপির স্কুলহাট গ্রামের গমচাষি মমিনুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, বেশিরভাগ কৃষকের ঘরেই গম নেই। গম ওঠার পর অনেকে বাজারে বিক্রি করেছে। কিছু বিত্তশালী কৃষকের কাছে গম মজুত থাকতে পারে।
ঠাকুরগাঁও গম গবেষণা কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা কৃষকদের অভিযোগের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে বলেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর ধান্দাবাজির কারণে চাষিরা এর সুফল পাচ্ছেন না। এবার সরকারিভাবে গমের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ২৮ টাকা। বাজারমূল্য থেকে সরকারি দর বেশি হওয়ায় অনেকে সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে (এলএসডি) গম বিক্রি করতে আগ্রহী।
উল্লেখ্য, এ বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় ৫০ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। আর এ পরিমাণ জমি থেকে দুই লাখ ৮৯ টন গম উৎপাদন হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট দফতরের উপ-পরিচালক মো. আফতাব হোসেন। এ মৌসুমে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬৭ হাজার ৬৭৫ হেক্টরে।