ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রংপুরে রোজার শুরুতেই ঊর্ধ্বমুখী বাজার

রংপুর অফিস
🕐 ৯:৩৪ অপরাহ্ণ, মে ২০, ২০১৮

রমজানের প্রথম দিন থেকেই দাম বাড়তে শুরু করেছে প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের। রমজানকে ঘিরে সাধারণ মানুষের খরচ বেড়ে যাওয়ায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বমুখীতে বেসামাল রংপুরের বাজার পরিস্থিতি।

এ নিয়ে প্রতিবছর সরকারের বিভিন্ন বিভাগের পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা বাজার পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তব চিত্র একেবারই উল্টো। ফলে রমজান মাসে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত অভিযানসহ শক্ত মনিটরিংয়ের দাবি করেছেন ভোক্তারা।
রমজানের আগের দিন গত বৃহস্পতিবার রংপুর মহানগরীর বেশ কিছু হোটেল, রেস্তোরাঁ, ফলের দোকান ও সিটি বাজারে অভিযান চালানো হয়। এতে জরিমানা গুনতে হয়েছে কিছু প্রতিষ্ঠানকেও। ভেজালবিরোধী এ অভিযানের প্রভাব পড়েনি রমজানের প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে।
রংপুর মহানগরীর সিটি বাজার, শাপলা চত্বর খাঁন বহুমুখী মার্কেট, এরশাদ মোড় বাজার, কামাল কাছনা বাজার, ধাপ সিটি বাজারসহ বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, রমজান শুরুর সঙ্গে সঙ্গে দাম বেড়েছে অনেক পণ্যের। এ পরিস্থিতিতে ভোক্তারা বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসনের নিয়মিত অভিযানসহ বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানিয়েছেন।
ভোক্তারা জানান, বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না থাকার বড় কারণ হলো কতিপয় ব্যবসায়ীর অতি মুনাফার লোভ। তা ছাড়া রয়েছে সিন্ডিকেট ও কারসাজি করে দাম বাড়ানোর প্রবণতা। এগুলো সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জানা থাকলেও তারা ব্যবস্থা নিতে প্রতিবছরই ব্যর্থ হয়। এ ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর দায়িত্বশীলতা এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
রংপুরের তামপাট এলাকার শিক্ষাবিদ নুরুল আবছার দুলাল জানান, বাজার নিয়ন্ত্রণের বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে মনিটরিং ব্যবস্থা। বাজারে ইন্টেলিজেন্স টিম পাঠানো দরকার। প্রয়োজনে অস্থায়ী ক্যাম্প গঠন করা। যাতে ভোক্তারা তাদের অভিযোগ বা মতামত জানাতে পারে।
রংপুররে সমাজকর্মী ও সংগঠক তানবীর হোসেন আশরাফী জানান, সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) প্রতিবছর খোলাবাজারে যা বিক্রি করে, তা পর্যাপ্ত নয়। তাদের আরও মজুদ বাড়াতে হবে। সংকট সৃষ্টির আগেই চাহিদানুযায়ী, বাজারে খাদ্যপণ্য পাঠাতে হবে। শুধু তাই নয়, তিনি রংপুরের ব্যবসায়ীদের বাজার পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে রাখার আহ্বান জানান।
শাপলা চত্বরের খান বহুমুখী কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা আনাম মিয়া জানান, আমরা তো দাম বাড়াই না। আমরা পাইকারদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনে বিক্রি করি। তা ছাড়া রমজানে সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকে। তবে কিছু কাঁচামালের দাম রমজান শুরুর আগেই বেড়ে যায়। সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে পারলে আশা করি, রমজানের আগে ও পরে দাম একই থাকবে।’
তামপাট রঘুবাজার এলাকার পাইকারি সবজি বিক্রেতা আশরাফুল আলম জানান, প্রতিবছরই রমজান শুরু হলেই চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পিয়াজ, বেগুন, রসুন, আদা, কাঁচামরিচ, কাঁকরোল, পেঁপে, পটোল, আলুসহ প্রয়োজনীয় পণ্যের  মূল্য বাড়ে। তবে তা খুব বেশি না।  
সাবেক পৌর চেয়ারম্যান কাজী মো. জুননুন জানান, প্রতিবছর রমজান শুরুর আগে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বেশকিছু ক্ষণস্থায়ী উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে বাজারে শৃঙ্খলা ফেরানো যাবে না। প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। তা ছাড়া প্রতিটি বাজারের দোকানগুলোয় যদি পণ্যের মূল্য তালিকা সরবরাহের ব্যবস্থা থাকে তাহলে মনিটরিং আরও সহজ হতো। কিন্তু আমাদের দেশে বাজার পরিস্থিতি বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওঠানামা করে। সকাল, বিকাল আর রাতের বাজারে পণ্য মূল্য এক রকম হয় না।

 
Electronic Paper