বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন বন্ধ
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
🕐 ৫:৩৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩০, ২০২৩

দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি। খনিটির উৎপাদনশীল ১১১৩ কোল ফেসের (কয়লা উত্তোলন বা নির্গমন মুখ) মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বুধবার (৩০ আগস্ট) থেকে বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করছেন বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মাইন অপারেশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) খান মো. জাফর সাদিক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ১১১৩ ফেইস থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়। ওই ফেস থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলনের পর উৎপাদিত কয়লা বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা হয়েছে। এই ফেসে মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ার ফলে নতুন ফেসে যন্ত্রপাতি স্থানান্তরের জন্য বুধবার থেকে কয়লা উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। সূত্র মতে, বর্তমানে বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বিসিএমসিএল এর ইয়ার্ডে ১ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা মজুদ আছে। যা দিয়ে প্রায় দুই মাস তাপ বিদ্যুৎ সচল রাখা সম্ভব হবে।
কয়লা খনির মাইন অপারেশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) খান মো. জাফর সাদিক জানান, ১১১৩ ফেসের কয়লার মজুদ শেষ হওয়ায় এবং নতুন ফেস ১৪১২ চালু করার জন্য যন্ত্রপাতি স্থানান্তর করার জন্য ৩০ আগষ্ট বুধবার থেকে কয়লা উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। একই সাথে তিনি বলেন, ১৪১২ ফেইসে নতুন করে ওপেন আব কাট নির্মাণ, ১১১৩ ফেইস হতে সকল ইক্যুইপমেন্ট স্যালভেজ ও যথাযথ মেইন্টেন্যান্স করে ১৪১২ ফেইসে স্থাপন কাজ করতে প্রায় দুই মাস সময় লাগবে। আশা করা যায় সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী অক্টোবরের শেষ নাগাদ নতুন ফেস থেকে আবারও উৎপাদন চালু করা সম্ভব হবে। ধারানা করা হচ্ছে, ১২১৪ নতুন ফেস থেকে প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিকটন কয়লা পাওয়া যাবে।
এদিকে বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক জানান, বর্তমানে তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের ২৭৫ মেগা ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ৩ নম্বর ইউনিটটি চালু আছে। যা থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৮০ থেকে ২২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়ে জাতীয় গ্রীডে যোগ হচ্ছে। ইউনিট চালু রাখতে প্রতিদিন ২ হাজার মেট্রিক টন কয়লা প্রয়োজন হয়। বর্তমানে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ইয়ার্ড ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইয়ার্ডে ১ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা মজুদ রয়েছে। যা দিয়ে প্রায় দুই মাস তাপ বিদ্যুতের এই ইউনিটটি সচল রাখা সম্ভব।
তিনি এক প্রশ্নের জাবাবে বলেন, তাপ বিদ্যুতের তিনটি ইউনিটের মধ্যে ওভার হোলিং এর কারনে দুই নং ইউনিটটি বন্ধ হয়ে আছে এবং কয়লা স্বল্পতার কারণে ২০১৯ সাল থেকে এক নম্বর ইউনিটটিও বন্ধ রয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রংপুর বিভাগে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা। বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট থেকে মাত্র ১৮০ থেকে ২২০ মেগাওয়াট উৎপন্ন করে জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করা হয়। তিনি আরও বলেন, তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রে তিনটি ইউনিট চালু রাখতে গেলে প্রতিদিন ৪ হাজার ৮০০ মেট্রিকটন থেকে পাঁচ হাজার মেট্রিকটন কয়লার প্রয়োজন।
বড়পুকুরিয় কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম সরকার এর সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি ২/১ দিনের মধ্যে খনি বন্ধ হয়ে যাবে নিশ্চিত করে বলেন, খনির মাইন অপারেশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) খান মো. জাফর সাদিকের সাথে কথা বলে বিস্তারিত জানতে বলেন।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
