খানসামায় আলোচিত একরামুল হত্যার রহস্য উদঘাটন
ফারুক আহম্মেদ খানসামা
🕐 ৬:৫৩ অপরাহ্ণ, জুন ০১, ২০২৩
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার একরামুল হক (৬০) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে খানসামা থানা পুলিশ। এই ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে বুধবার (৩১ মে) সকালে এই দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) দুপুরে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন খানসামা থানা অফিসার ইনচার্জ চিত্ত রঞ্জন রায়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার পূর্ব হাসিমপুর গ্রামের ১। বাসন্তী রানী রায় (৫০), স্বামী অবিনাশ চন্দ্র রায়, ২। অনন্ত কুমার রায়(২৮), পিতা অবিনাশ চন্দ্র রায়।
জানা যায়, নিহত একরামুল হক উপজেলার ৬নং গোয়ালডিহি ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামের ঘটু মিয়ার ছেলে। নিহত একরামুল পুলেরহাটসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ফেরি করে ভাঙরী সংগ্রহ করে এবং খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করতেন। গত ১৩ নভেম্বর ২০২২ তারিখে ভুট্টা চাষী মিজানুর রহমান নিহত ব্যক্তির মরদেহ দেখতে পান। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ছুটে আসেন এলাকাবাসী ও পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত ১৩ নভেম্বর ২০২২ তারিখে একরামুল হক (৬০) এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়। এরপর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসে। সেই রিপোর্টে মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এরপর গত ১৫/০৪/২০১৩ তারিখে ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
আসামী বাসন্তী রানী তাহার শয়ন ঘরের পিছনে আর্থিক বিনিময়ে শারিরীক মেলামেশা করতে যায়। শারিরীক মেলামেশা করার নিমিত্তে ভিকটিম মৃত একরামুল হক যৌন উত্তেজক ০২(দুই) টি ট্যাবলেট সেবন করে এবং সাথে পুরুষাঙ্গ শক্ত করার নিমিত্তে কথিত একধরনের মালিশের তেলও নিয়ে যায়। আসামী বাসন্তী রানী রায় ও ভিকটিম একরামুল হক মেলামেশার জন্য উদ্যত হলে বয়স্ক একরামুলের পুরুষাঙ্গ প্রস্তুত হয় না। ফলে একরামুল বারংবার বাসন্তীকে উক্ত মালিশ তেল পুরুষাঙ্গে মালিশের অনুরোধ করে। কিন্তু দীর্ঘ সময় মালিশের পরও যখন পুরুষাঙ্গ প্রস্তুত হয় না তখন বাসন্তী বিরক্ত হয় এবং মালিশের তেলের বিকট গন্ধে আরও ত্যক্ত বিরক্ত হয়। অপরদিকে বাসন্তীর ছেলে অনন্ত কুমার রায় হটাৎ বাড়িতে চলে এসে মায়ের কুকীর্তি দৃষ্টি গোচর হতে পারে এই শঙ্কা নিয়ে বাসন্তী তাড়াতাড়ি যৌনকার্য সম্পন্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছিল। ভিকটিম একরামুল হকের পুরুষাঙ্গ যৌনকার্য করার জন্য প্রস্তুত না হলে সব মিলিয়ে বাসন্তী বিরক্ত হয়ে ভিকটিম একরামুল হককে ধাক্কা দিলে বৃদ্ধ একরামুল পাশে থাকা বাসন্তীর শ্রয়ন ঘরের বাশের খুটির সাথে ধাক্কা খেয়ে মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয়ে ঘটনাস্থলে মৃত্যু বরন করে। পরে একরামুল হককে মৃত বলিয়া বুঝিতে পারিয়া বাসন্তী ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে এবং ভয়ে কপিতে থাকে। পরে তাহার ছেলে অনন্ত কুমার রায় বাড়িতে আসলে মা ও ছেলে শলা পরামর্শ করিয়া বাড়ির নিকট হতে মৃত দেহটি বাড়ি হতে অনুমান ১০০ গজ দূরে জনৈক মো: শহিদুল ইসলামের কর্তিত ধান ক্ষেতে ফেলে আসে।
এছাড়া তিনি জানান, আসামি বাসন্তী ও অনন্ত হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি গ্রহণ শেষ হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।