কাজ সমান, মজুরী কম
কাউনিয়ায় বৈষম্যের শিকার নারী শ্রমিক
মোস্তাক আহমেদ, কাউনিয়া
🕐 ৫:০৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৮, ২০২৩
নারীরা আজও কর্ম ক্ষেত্রে অবহেলিত। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ঘটা করে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, নারীদের নিয়ে সভা সমাবেশ অনেক কিছুই হয় কিন্তু শ্রম আইন এর বাস্তব প্রয়োগ এ উপজেলায় নেই বললেই চলে। রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার নারী শ্রমিকরা চরম মজুরী বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে উপজেলায় হারাগাছ পৌরসভাসহ ছয়টি ইউনিয়নে পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি নারী শ্রমিকেরা কাজ করছে। বর্তমানে পুরুষ শ্রমিকদের চেয়ে নারী শ্রমিকের কদর বেশী হলেও বৈষম্যে থেকে তারা রেহাই পাচ্ছে না। নারী শ্রমিকরা হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রমের পর ন্যায্য মজুরী থেকে বঞ্চিত হয়ে অতি কষ্ঠে জীবন যাপন করছে। ধান লাগানো, মাটি কাটা, হোটেল, রাইচ মিল, চাতাল, বিড়ি ফ্যাক্টরি, ইটভাটা, রাজমিস্ত্রীর জোগালী, পাথর ভাঙ্গার কাজসহ সবরকম ভারী কাজে পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরা সাফল্যের সাথে করালেও মালিকদের কাছ থেকে নারীরা ন্যায্য মজুরী পাচ্ছে না।
উপজেলার অধিকাংশ নারী শ্রমিক স্বামী পরিত্যাক্তা, বিধবা, কেউবা অধিক সন্তানের জননী আবার কারও স্বামী পঙ্গু। অভাবের তারনায় তাদের হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করতে হয়। বিনিময়ে মালিকরা যা দেয় তা দিয়ে ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে হয়। যদি কেউ মজুরী নিয়ে প্রতিবাদ করে তবে তাদের কাজ থেকে বাদ দিয়ে দেয়া হয়। পুরুষ শ্রমিক যেখানে একই কাজ করে পায় ৩০০টাকা সেখানে নারী শ্রমিকরা পায় ২০০ টাকা।
বৈষম্যের শিকার এরকম দুই একজন নারী শ্রমিকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, জিনিস পত্রের যে দাম মালিক যে টাকা দেয় তাতে কিছুই হয় না। যা পাই তাই দিয়ে কোন মতে বেঁচে থাকি, খেয়ে না খেয়ে।
একটি বে-সরকারী সংস্থার হিসাব অনুযায়ী জানা গেছে, এ উপজেলায় ৫ হাজারের অধিক নারী শ্রমিক রয়েছে, যারা শ্রম আইনের আওতায় নেই বরং বৈষম্যের শিকার। সভ্যতার বিকাশে নারীর অবদানের জয়গান শোনা গেলেও কাউনিয়া উপজেলায় নারী শ্রমিকদের ঘাম ঝরানো শ্রমের মর্যাদা ধুলোয় লুটিয়ে মিশে যেতে বসেছে। যত বৈষম্যে সব যেন শুধু নারীরই জন্য। নারী শ্রমীকদের ন্যায্য অধিকার ফিরে দিতে শ্রম আইনের বাস্তব প্রয়োগ প্রয়োজন।