ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

গঙ্গাচড়ায় টিসিবি’র পণ্য নিতে ভোগান্তি

নির্মল রায়, গঙ্গাচড়া
🕐 ৪:৩১ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৯, ২০২৩

গঙ্গাচড়ায় টিসিবি’র পণ্য নিতে ভোগান্তি

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় টিসিবি’র পণ্য নিতে কার্ড ধারী দুস্থ মানুষদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। এছাড়া টিসিবি’র ডিলারের বিরুদ্ধে পণ্য ওজনে কম দেয়াসহ নানান অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। গত শনিবার রাত ৮টায় উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে টিসিবি পণ্য বিক্রয় স্থানে গিয়ে পাওয়া যায় এসব অভিযোগের সত্যতা।

এসময় কোলকোন্দ ইউনিয়নের আবুল কালাম (৫৫) সারাদিন লাইনে দাড়িয়ে টিসিবির পণ্য না পেয়ে আক্ষেপ করে বলেন, হামারগুলার মতো গরিব মানুষরা যাতে সামনের রমজান মাসে তেল, চিনি, কালাই, ছোলা কমদামে কিনি খাবার পায় এজন্য সরকার হামাকগুলাক টিসিবি দেয় চোল । কিসের কি কম দামে কিনি খামো। সেই সকাল ৮ টার সময় কাজকাম ছারি আসছি কাক ফাটা রইদোত দারে থাকনুং এখন বাজে রাত ৮ টা কোনো মাল পানুং না।

মাল দেয়ার আগত ডিলারের লোক জন টাকা নিয়া থুয়া দিছে । আর কোনো খবর নাই। সকাল সুকাল আসছুনুং যাতে তারাতাড়ি মাল কোনা তুলি মানুষের কামত যাবার পাও এই তো সকাল থাকি মাল তোলং চোং। বাবা তোরায় কন তো এইগুলা ফাজলামো নোয়ায়? দুই টাকা বাঁচপার আসি যদি একটা দিন পরে তাহলে এমার এগুলা মাল নিয়া লাভ কি? বর্তমান যে কামলার দাম দিনটাত কাজ করলে ৫০০ টাকা পানুং হয়। সারাদিন গেলো এখন পর্যন্ত মাল মানুং না।

জানা গেছে, সারাদেশের ন্যায় রংপুরের গঙ্গাচড়ায় পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ভর্তুকি মূল্যে ছোলাসহ নিত্যপণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে। রোজা উপলক্ষ্যে দেশব্যাপী এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী টিসিবির পণ্য কিনতে পারবে। চারটি পণ্য ৪৭০ টাকার প্যাকেজে বিক্রি করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার মেসার্স নাফিসা এন্টারপ্রাইজ এর মাধ্যমে উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে টিসিবির পণ্য বিতরণ করা হয়। ভোক্তারা সকালে কম দামে পণ্য কিনতে এসে ভোগান্তিতে পড়েন। এসময় ভোক্তারা অভিযোগ করেন চিনি এবং ছোলাতে ১৫০- ২০০ গ্রাম ওজনে কম দেওয়া হচ্ছে ।

কোলকোন্দ ইউনিয়নের চর চিলাখালের শ্রীমতি রেনু বালা বলেন, বাবা মুই সেই সকাল ১০ টায় আসচুং এলা ৫ টা বাজে এলাং পাং নাই টিসিবির মাল নিবার।

একই এলাকার আলম মিয়া বলেন, সাত ঘন্টা হনুং আসবার আরো যে কয় ঘন্টা লাগবে আল্লাহ জানে। রাইতোত এই চর বাড়ির রাস্তাত ৬/৮ কিলো রাস্তা কেমনে যাইম, টাকা আগোত জমা দিয়া আরো বিপদত পরচুং বাবা। শুধু আজিবর, রেনু বালা আলম মিয়া নয়, টিসিবির পণ্য কিনতে আশা প্রায় ৫০ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ডিলারের অব্যবস্থাপনার কারণে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।

এ বিষয়ে নাফিসা এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার নাহিদা আক্তার বলেন, লোকজন বেশি হওয়ায় সামাল দেওয়া কঠিন হয়েছে। আমি কারো উপর পুরোপুরি ছেড়ে দিতে পারছি না। এবার আমার অভিজ্ঞতা হলো পরবর্তীতে এ ধরনের সমস্যা হবে না। ওজনে কম দেওয়ার বিষয় তিনি বলেন, ওজনে মাল কম দেয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠেনা। আমার লোকজন ভালো করে মাল ওজন করে তারপর প্যাকেট করেছে ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ তামান্না বলেন, আমাদের উপজেলায় এবারে টিসিবির নতুন ডিলার ১৪ জন এর মতো বেড়েছে। তারা কিভাবে মালামাল সরবরাহ করতে হবে তাদের জানা নেই । তাদের অব্যবস্থার কারণেই জনসাধারণের ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

ওজনে কম দেয়ার বিষয় তিনি বলেন, আমাকে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা কিছু ভিডিও পাঠিয়েছে, ভিডিওগুলো আমি দেখেছি। কম দেয়া বিষয় তাদেরকে কারণ-দর্শানোর নোটিশ করা হবে।

 

 
Electronic Paper